Topic: গল্পঃ অন্তর্জালিক কথোপকথন
(সময়ঃ গভীর রাত)
অমিতঃ “আমার জন্যে আজ তুমি অপেক্ষা করে ছিলে?” কোন বইয়ের লাইন বলো!
লাবণ্যঃ অবশেষে তুমি আসলে!
অমিতঃ হুম…
লাবণ্যঃ এক পুরোনো বন্ধু’র সাথে কথা বলছিলাম। আমি ভাবছিলাম তোমার আরো দেরি হবে!
অমিতঃ কোন বইয়ের লাইন বলো!
লাবণ্যঃ অনেক বইয়েই এই লাইন থাকে!
অমিতঃ উঁহু! অনেক বইয়ে থাকে না!
লাবণ্যঃ হিন্টস দাও!
অমিতঃ লেখক মৃত এবং কবিও ছিলেন
লাবণ্যঃ সুনীল?
অমিতঃ তুমি গাধা। সুনীল মরলো কবে! এটা রবী ঠাকুরের শেষের কবিতার একটা লাইন।
লাবণ্যঃ শোনো রাগ করো না, কিন্তু বইটা আমার ভালো লাগে নি।
অমিতঃ প্রথমবার পড়ে আমারও ভালো লাগে নি। এরপর যতবার পড়ি ততবারই ভালো লাগে আর নতুন মনে হয়। তুমি আমার জন্য আজ অপেক্ষা করে ছিলে?
লাবণ্যঃ হুম। করছিলাম তো! দেখতেই পাচ্ছো! ১২টায় এসেছি অনলাইনে। এরপর নিছক সময় কাটানোর জন্য একজনের সাথে কথা বলছিলাম মেসেঞ্জারে। এরপর এক বন্ধুর সাথে ফোনে কথা বললাম ৪২ মিনিট। তুমি ছিলে কোথায়?
অমিতঃ তোমাকে মেইলে বললাম যে পাশের শহরে এসেছি। এক বন্ধু’র সাথে আছি আজ। গল্পে গল্পে দেরি হয়ে গেলো।
…
লাবণ্যঃ ফেসবুক থেকে প্রোফাইল ছবি মুছে দিয়েছি।
অমিতঃ কেন! এডমায়ার বেড়েছে নাকি তোমার? কার সাথে কথা বলছিলে?
লাবণ্যঃ ফরিদপুর থেকে যেদিন চলে আসি, পুরো রাস্তা কেঁদেছিলাম। এত্তো খারাপ লাগছিল! ওখানকারই এক বন্ধু’র সাথে কথা বলছিলাম।
অমিতঃ খুব মিস করো!
লাবণ্যঃ ঢাকা আমার একদমই ভালো লাগে না। কেমন দমবন্ধ চারদিক! মানুষগুলোও জানি কেমন!
অমিতঃ তোমার নানাবাড়ি কোথায় যেন?
লাবণ্যঃ চাঁদপুরে। ভুলে গেলে!
অমিতঃ ঢাকা থেকে চাঁদপুরের লঞ্চ জার্নিটা খুব মজার!
লাবণ্যঃ হুম। রাতের বেলা যাওয়ার সময় আমরা কেবিন ছেড়ে লঞ্চের সামনের দিকটাতে গিয়ে বসি। আব্বু চায়ের কেটলী থেকে চা ঢালতে ঢালতে তাঁর গল্প শুরু করেন।
অমিতঃ একবার আমরা অনেক বন্ধু মিলে গিয়েছিলাম, চাঁদনী রাত ছিল। ডকে বসে আড্ডা দিতে দিতে কখন জানি রাস্তা ফুরিয়ে গেল! সকালে চাঁদপুরে নাস্তা করে সাথে সাথেই ফিরলাম আবার ঢাকায় বাসে করে।
লাবণ্যঃ হুম চাঁদনী রাত হলে তো কথাই নেই! ঢেউয়ের ঝিলিক তখন এত মোহনীয় লাগে!
…
লাবণ্যঃ অ…মি…ত…
অমিতঃ হুম!
লাবণ্যঃ তোমার কি আজ মন খারাপ?
অমিতঃ কেন?
লাবণ্যঃ তোমার মেইল দেখে তাই মনে হলো।
…
লাবণ্যঃ অমিতকে আজ কোথায় রেখে এলে!
অমিতঃ কাকে?
লাবণ্যঃ ফাজিল অমিতকে!
অমিতঃ ওহ! আছে আমার মাঝেই আছে! আচ্ছা শোনো… তোমাকে কি জানি বলবো ভাবছিলাম। ভুলে গেলাম!
লাবণ্যঃ জানো! তোমাদের ছবিটা দেখে আমার অনেক চেনা মনে হয়েছে! আমি নিশ্চিত তোমাদেরকে দেখেছি কোথাও!
অমিতঃ দেখেছো হয়তো! ওহ! নানাবাড়ি কবে যাবে?
লাবণ্যঃ পহেলা বৈশাখ।
অমিতঃ ফিরবে কবে? কি আনন্দ! তাই না!
লাবণ্যঃ কিসের কি! মামাত খালাত ভাই বোনরা এখন আর কেউ নাই! এটাই বলতে চাইছিলে?
অমিতঃ ফিরবে কবে?
লাবণ্যঃ পরদিনই হয়তো! এটাই বলতে চাইছিলে??
অমিতঃ জানি না! মনে নেই!
লাবণ্যঃ একটা গিফট পাঠিয়েছিলাম, পেয়েছো?
অমিতঃ কোথায়!
লাবণ্যঃ ফেসবুকে।
অমিতঃ ওহ! দেখিনি, দেখছি।
লাবণ্যঃ আচ্ছা পরে দেখো, এখন দেখতে হবে না। তোমার মন আজ মনে হচ্ছে অনেক খারাপ। কেতকী কেমন আছে? কোন হলে জানি থাকে? কথা হয়নি আজ?
অমিতঃ জাহানারা ইমাম হল। হুম কথা হয়েছে।
লাবণ্যঃ আরে ও হলে তো আমিও ছিলাম! ওর বাড়িও কি পাবনা?
অমিতঃ না। সিলেটে।
লাবণ্যঃ তুমি এক কাজ করো ঘুমানোর চেষ্টা করো। ভালো লাগবে। আচ্ছা তোমাদের পরিচয় হয়েছিল কেমন করে?
অমিতঃ হুম ঘুমাবো। তুমিও ঘুমাও। অনেক রাত হলো।
লাবণ্যঃ আচ্ছা, তোমাদের পরিচয় হয়েছিল কেমন করে বলে যাও!
অমিতঃ অনেক বড় গল্প। আরেকদিন বলি?
লাবণ্যঃ আচ্ছা ঠিক আছে, লিখে মেইল করো।
অমিতঃ তোমার শোভন কেমন আছে?
লাবণ্যঃ Bye! ঘুমাতে যাও এখন। পরে গল্প হবে আবার!
অমিতঃ আচ্ছা ঠিক আছে। Bye for today!
লাবণ্যঃ তোমার মন ভালো করতে পারলাম না!
অমিতঃ আমি ঠিক আছি! তুমি ভালো থেকো!
লাবণ্যঃ একটু হাসো তো!
অমিতঃ ভালো থেকো।
সূত্র : ইন্টারনেট
Medical Guideline Books