Topic: হজরত মুহম্মদ (সা.) এর বিদায় হজের ভাষণ

http://www.bangladesh-pratidin.com/admin/news_images/290/image_290_51612.jpg

হাফেজ শেখ মিরাজ

মহানবী (সা.) জন্মগ্রহণ করেছিলেন রবিউল আউয়াল মাসে। এ পৃথিবী থেকে বিদায়ও নেন এই মাসে। মৃত্যুর আগে মহানবী (সা.) শেষ হজব্রত পালনের সময় পৃথিবী থেকে তার বিদায়ের সময় যে ঘনিয়ে এসেছে সে সম্পর্কে আভাস দেন। ইসলামের পারিবারিক, সামাজিক এবং রাষ্ট্রীয় দিক দর্শন ঘোষিত হয়েছিল রাসূলে পাক (সা.) এর ওই ভাষণে। মহানবী (সা.) বিদায় হজের ভাষণে বলেন, হে আমার প্রিয় ভক্তবৃন্দ, আজ যে কথা তোমাদের বলব, মনোযোগ দিয়ে শ্রবণ কর। আমার আশঙ্কা হচ্ছে, তোমাদের সঙ্গে একত্রে হজ করার সুযোগ আর আমার ঘটবে না।

হে মুসলিম, আঁধার যুগের সমস্ত ধ্যান-ধারণাকে ভুলে যাও, নব আলোকে পথ চলতে শিখ। আজ হতে অতীতের সব মিথ্যা সংস্কার, অনাচার ও পাপ-প্রথা বাতিল হয়ে গেল। মনে রেখ সব মুসলমান ভাই-ভাই। কেউ কারও চেয়ে ছোট নও, কারও চেয়ে বড় নও। আল্লাহর চোখে সবাই সমান।

নারী জাতির কথা ভুলো না। নারীর ওপর পুরুষের যেরূপ অধিকার আছে, পুরুষের ওপর নারীরও সেরূপ অধিকার আছে। তাদের প্রতি অত্যাচার করো না। মনে রাখবে_ আল্লাহকে সাক্ষী রেখে তোমরা তোমাদের স্ত্রীকে গ্রহণ করেছ।

সাবধান! ধর্ম সম্বন্ধে বাড়াবাড়ি করো না। এই বাড়াবাড়ির ফলে অতীতে বহু জাতি ধ্বংস হয়েছে। প্রত্যেক মুসলমানের ধন-প্রাণ পবিত্র বলে জানবে। যেমন পবিত্র আজকের এই দিন_ ঠিক তেমনই পবিত্র তোমাদের পরস্পরের জীবন ও ধন-সম্পদ।

হে মুসলমানগণ, হুঁশিয়ার! নেতার আদেশ কখনো লক্সঘন করো না। যদি কোনো কর্তিত-নাশা কাফ্রী ক্রীতদাসকেও তোমাদের আমীর করা হয় এবং সে যদি আল্লাহর কিতাব অনুসারে তোমাদের চালনা করে, তবে অবনত মস্তকে তার আদেশ মেনে চলবে।

দাসদাসীদের প্রতি সর্বদা সদ্ব্যবহার করবে। তাদের ওপর কোনোরূপ অত্যাচার করবে না। তোমরা যা খাবে তাদেরও তাই খাওয়াবে; যা পরবে তাই পরাবে। ভুলে যেও না তারাও তোমাদেরই মতো মানুষ। সাবধান! পৌত্তলিকতার পাপ যেন তোমাদের স্পর্শ না করে। শিরক করো না, চুরি করো না, মিথ্যা কথা বলো না, ব্যভিচার করবে না। সর্বপ্রকার মলিনতা হতে নিজেকে মুক্ত করে পবিত্রভাবে জীবনযাপন করবে। চিরদিন সত্যাশ্রয়ী হবে। মনে রাখবে, একদিন তোমাদের আল্লাহর কাছে ফিরে যেতে হবে। সেদিন তোমাদের কৃতকর্মের জন্য জবাবদিহি করতে হবে। বংশের গৌরব করো না। যে ব্যক্তি নিজ-বংশকে হেয় মনে করে অপর কোনো বংশের নামে আত্মপরিচয় দেয়, আল্লার অভিশাপ তার ওপর নেমে আসে।

হে আমার উম্মতগণ, আমি যা রেখে যাচ্ছি, তা যদি তোমরা দৃঢ়ভাবে ধারণ করে থাক, তবে কিছুতেই তোমাদের পতন হবে না। সেই গচ্ছিত সম্পদ কি? তা আল্লাহর কোরআন এবং তার রাসূলের আদেশ। নিশ্চয় জানবে, আমার পর আর কোনো নবী নেই। আমিই শেষ নবী। যারা উপস্থিত আছ, তারা অনুপস্থিত সব মুসলমানের কাছে আমার এই বাণী পেঁৗছে দিও...। এ পর্যন্ত বলে রাসূল পাক (সা.) ঊর্ধ্বাকাশে তাকিয়ে আবেগ ভরে বললেন, হে আল্লাহ, হে আমার প্রভু, আমি কি তোমার বাণী পেঁৗছে দিত পারলাম? আমি কি আমার কর্তব্য সম্পাদন করতে পারলাম? লক্ষ্য কণ্ঠে নিনাদিত হলো : নিশ্চয়! নিশ্চয়!!

তখন হজরত কাতর কণ্ঠে পুনরায় বললেন, প্রভু হে, শ্রবণ কর, সাক্ষী থাক; এরা বলছে আমার কর্তব্য আমি করছি। এই সময় কোরআনের শেষ আয়াত নাজিল হলো : '(হে মুহম্মদ!) আজ আমি তোমার দীনকে সম্পূর্ণ করলাম এবং তোমার ওপর আমার নিয়ামত পূর্ণ করে দিলাম। ইসলামকেই তোমার ধর্ম বলে মনোনীত করলাম।'

মেডিকেল বই এর সমস্ত সংগ্রহ - এখানে দেখুন
Medical Guideline Books


Re: হজরত মুহম্মদ (সা.) এর বিদায় হজের ভাষণ

ধন্যবাদ শামীম ভাই।
দরকারী জিনিস শেয়ার করেছেন..!