Topic: ইসলামী ই-বুক ডাউনলোড পর্ব-১
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ,
ইসলামিক বই ২ পর্বে আপনাদের খেদমতে নিয়ে আসলাম তিনটি বই যার প্রথমটি পবিত্র কোরআনের প্রাথম “সুরা ফাতিহা”র তাফসির । তাফসির করেছেন শায়খুল ইসলাম মোহাম্মদ বিন আঃ ওহ্হাব (রাহঃ) ভাষান্তর করেছেন মোহাম্মদ রকিবুদ্দিন ।
২য়টি ইসলামের সচিত্র গাইড এটি সম্পর্কে আমি কিছু লিখলাম না। অনুবাদকের ভুমিকাটিই যথেষ্ট বলে মনি করি।
অনুবাদকের কথা
الحمد لله رب العالمين والصلاة و السلام على المبعوث رحمة للعالمين سيدنا محمد عليه أفضل الصلاة و أتم التسليم- و على آله و أصحابه و من تبعهم بإحسان إلى يوم الدين-أما بعد-
ইসলাম একটি পুর্ণাংগ জীবন ব্যবস্থার নাম। এটি আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের নিকট একমাত্র গ্রহণযোগ্য ধর্ম।ইসলাম ছাড়া অন্য কোন ধর্মকে আল্লাহ তায়ালা গ্রহণ করবেন না।তিনি বলেন:
وَمَنْ يَبْتَغِ غَيْرَ الْإِسْلَامِ دِينًا فَلَنْ يُقْبَلَ مِنْهُ وَهُوَ فِي الْآخِرَةِ مِنَ الْخَاسِرِينَ (85)
অর্থাৎ, আর যে ইসলাম ছাড়া অন্য কোন কিছুকে ধর্ম তথা জীবন ব্যবস্থা হিসেবে গ্রহণ করবে তা কস্মিনকালেও গ্রহণযোগ্য হবে না। আর পরকালে সে হবে ক্ষতিগ্রস্থদের অন্তর্ভুক্ত। (সুরা আলে ইমরান:৮৫)
আমরা মুসলমানরা অনেকেই ইসলামকে না জেনে না বুঝে সেটাকে অন্যান্য ধর্মের মতই একটি গতানুগতিক ধর্ম বলে মনে করি।যখন কেউ ইসলামের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে বলে যে,ইসলাম ১৪০০ বছর আগের জন্য যুগোপযোগী ছিল।এখন তা যুগোপযোগী নয়।আমরা তখন তার কথার কোন জবাব দিতে সক্ষম হই না বরং,আমাদের কাছে ইসলাম ধর্মের ব্যাপারে মনের মধ্যে বিভিন্ন খটকার সৃষ্টি হয়।এটা মুসলমানদের জন্য খুবই দুর্ভাগ্যপজনক।
আল্লাহ তায়ালা ইসলামকে সহজ করে দিয়েছেন।যে কেউ তার সমস্যার সমাধান একটু কষ্ট করেই ইসলামের কাছ থেকে খুজে নিতে পারে।এতে তেমন বেগ পেতে হয় না।
অনেকে মনে করেন, আজকের বিজ্ঞান কুরআনের সাথে সামঞ্জস্যশীল নয়। কিন্তু, আসলে কি তাই? না ।বরং,আল-কুরআন থেকেই বিজ্ঞানীরা অনেক সময় তাদের গবেষনার কাজে সহয়তা নিচ্ছে।তাদের নতুন নতুন আবিস্কার ও বিজ্ঞানের গবেষনালব্ধ ফলাফল কুরআন শরীফের সাথে হুবহু মিলে যাচ্ছে।
আমি একদিন আমার এক বন্ধুর সাথে “কুরআন ও বিজ্ঞান”বিষয়ে কথা বলছিলাম। তিনি বললেন:কুরআন ও বিজ্ঞানের মধ্যে তো মিল নেই।আমি জিজ্ঞাসা করলাম কোন জায়গায় মিল নেই? তিনি বললেন:বিজ্ঞান বলছে পৃথিবীর সৃষ্টি হয়েছে বিগ ব্যাং নামক মহা বিস্ফোরনের মাধ্যমে কিন্তু,কুরআন তো তা বলে না।আমি তাকে বললাম: ভাই! আসলে কুরআন নিয়ে পড়াশুনা না করার কারণে আমরা অনেকেই এ রকম কথা বলে ফেলি।অথচ,কুরআন শরীফেই আল্লাহ তায়ালা পৃথিবী সৃষ্টির আলোচনা করেছেন।আল্লাহ তায়ালা সুরা আম্বিয়ায় বলেছেন:
أَوَلَمْ يَرَ الَّذِينَ كَفَرُوا أَنَّ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ كَانَتَا رَتْقًا فَفَتَقْنَاهُمَا
অর্থাৎ, অবিশ্বাসীরা (কাফিররা) কি চিন্তা করে না যে, আকাশ ও পৃথিবী একিভুত ছিল (মুখ বন্ধ ছিল) অতঃপর আমি তাদেরকে আলাদা করেছি? (সুরা আম্বিয়া:৩০)
এই আয়াতের সাথে তো বিগ ব্যাং এর কোন বৈপরিত্য থাকল না। তবে, যখন দেখা যাবে যে,বিজ্ঞানের সাথে কুরআন শরীফের কোন বিষয় মিলছে না তখন বুঝতে হবে যে, কুরআন শরীফ যেটা বলেছে সেটাই সত্য;বিজ্ঞানীদের গবেষনা সঠিকভাবে হয়নি। বিজ্ঞানীদের গবেষনার আরও প্রয়োজন রয়েছে।কেননা,বিগত দিনে এমনই প্রমাণিত হয়েছে।
ইসলাম শুধুমাত্র কুরআন বা হাদীসে উল্লিখিত বিষয়ের ভিতরেই তার পরিধি ব্যাপ্ত করে রাখেনি।বরং,সেটা যেন নিত্য নতুন ভাবে মানুষের সামনে আসতে পারে সে জন্য নতুন নতুন বিষয়ের ক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত দেয়ার জন্য ইসলামের রয়েছে কিছু কিছু সুত্র।নতুন নতুন বিষয় সামনে আসলে সে সুত্রগুলোর আলোকে তাকে যাচাই বাছাই করেই সিদ্ধান্ত দেবে স্কলাররা।এ ছাড়া আল্লাহ তায়ালা চান- তার বান্দারা নিজেদের বিবেক বুদ্ধি খাটিয়ে চিন্তা ভাবনা করুক।তাই,ছোট খাট বিষয়কে তাদের চিন্তা-ভাবনার উপরই ছেড়ে দেয়া হয়েছে।
অনেকে প্রশ্ন করেন- ইসলামে চারটা মাজহাব হল কেন?
এর উত্তর হচ্ছে- ইসলামের মৌলিক বিষয় সমুহের ক্ষেত্রে উক্ত চার মাজহাবসহ অন্যান্য গ্রহণযোগ্য মাজহাবের প্রবক্তা ইসলামিক স্কলারদের মধ্যে কোন মতবিরোধ নেই। তাদের মতবিরোধ শুধু ছোটখাট বিষয়ের উপরে।আর এটা ইসলাম কর্তৃক স্বীকৃত চিন্তা-ভাবনার বিকাশের কারণেই হয়ে থাকে।উল্লেখ্য যে,উক্ত ইসলামী স্কলারদের চিন্তা-ভাবনার ও মতামতের মাঝে মতবিরোধ থাকলেও তারা একে অপরকে অত্যন্ত সম্মান করতেন।
ইমাম শাফেয়ী (রহঃ) কথায় আসা যাক-
তিনি বলেছেন:যে ফিকহের (ইসলামি হুকুম আহকাম) ক্ষেত্রে গভীর জ্ঞান অর্জন করতে চায় সে যেন ইমাম আবু হানিফা (রহঃ) এর গ্রন্থাদি পড়াশুনা করে।(আশবাহু ওয়ান নাযায়ের-ইবনে নুজাইম)এ ছাড়া তিনি বলেছেনভাবার্থে) ফিকহের ক্ষেত্রে মানুষেরা ইমাম আবু হানিফা (রহঃ)এর মুখাপেক্ষী।
এ বইটি অধ্যয়নের মাধ্যমে আমরা ইসলামের মৌলিক বিষয়গুলো সম্বন্ধে সংক্ষেপে জানতে পারব।এ বইয়ের মধ্যে কুরআনের কিছু মিরাকেল ছবির মাধ্যমে উপস্থাপন করা হয়েছে।যা মহাগ্রন্থ আল কুরআন তথা ইসলামের সত্যতারই প্রমাণ বহণ করে। সবশেষে,আল্লাহ রাব্বুল আলামীন যেন আমাকে কুরআন ও হাদীস অনুসারে জাতিকে কিছু উপহার দেয়ার তাওফিক দান করেন এই দোয়া কামনা করে এখানেই শেষ করছি। আল্লাহ হাফেজ।দোয়া কামনায়-
তাং-২৪শে জুলাই,২০১০
মুহাম্মদ ইসমাইল জাবীহুল্লাহ
আল-আযহার বিশ্ববিদ্যালয়
কায়রো, মিশর
তৃতীয় বইটি ইসলামে নারী বনামপুস্তক ও বাস্তবতায় ইহুদী ও খৃষ্টান ধর্মে নারী মুহাম্মদ ইসমাইল জাবীহুল্লাহ, আল-আযহার বিশ্ববিদ্যালয়, মিশর
অনুবাদকের কথা
الحمد لله رب العلمين- و الصلاة و السلام على من لا نبى بعده- و على آله و أصحابه و بارك و سلم- أما بعد
আমাদের সমাজের লোকেরা ইসলাম সম্বন্ধে সঠিক জ্ঞান না থাকার কারনে ইসলামের নামে অনেক অপবাদ আরোপ করে বসে যার সাথে ইসলামের কোন সম্পর্ক নেই। ইসলামের সঠিক জ্ঞান থাকলে তারা এটা বলত না। এ ধরণের বিষয়গুলোর মধ্যে নারীর অধিকার একটি। তারা বলে থাকে ইসলাম নারীকে ঠকিয়েছে তার প্রমাণ নিকটাত্মীয়ের পরিত্যক্ত সম্পত্তিতে নারীর অংশ পুরুষের অর্ধেক। এছাড়াও তারা বলে ইসলাম পুরুষকে চারটি বিবাহের অনুমতি দিয়েছে অথচ, নারীকে একটির বেশী বিবাহের অনুমতি দেয় নি। এখানেও নাকি নারীকে ঠকানো হয়েছে ইত্যাদি হাজারো অভিযোগ তাদের ইসলামের বিরুদ্ধে। তারা কি কখনো এগুলোর পিছনের কারণগুলো নিয়ে চিন্তা ভাবনা করেছে? কেন নারীকে পুরুষের অর্ধেক অংশ দেয়া হল? সব সময়ই কি নারীর অংশ পুরুষের অর্ধেক? তারা যদি এগুলো নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করে তাহলে তারা তার ভিতর দেখতে পাবে ন্যায় ও ইনসাফের অনন্য দৃষ্টান্ত। উত্তরাধীকার সম্পদেই আসি। নারীকে জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত পরিবারের কোন খরচের দায়িত্ব দেয়া হয় নি। শশুর বাড়ীতে তার আত্মীয়-স্বজন আসলেও তাদের আপ্যায়নের জন্য তার চার আনা পয়সাও খরচ করতে হয় না। সন্তান সন্ততি লালন-পালনের খরচ তার করা লাগে না ইত্যাদি। এসব কিছুর দায়িত্ব তার স্বামীর। সে যেটুকু পায় তার সবই থেকে যায়। সবই আয় কোন ব্যয় নেই। পক্ষান্তরে, পরিবারের সর্বক্ষেত্রের ব্যয় স্বামীকে বহন করতে হয়। স্ত্রী যদি কোটিপতিও হয় তার উপর তার নিজের খরচ চালানোর দায়িত্ব দেয়া হয় নি। বরং, তার খরচ চালানোর দায়িত্বও তার স্বামীর উপর ন্যস্ত। অপরদিকে, পুরুষেরা সাধারনত চারটি জায়গা থেকে উত্তরাধিকার সম্পদ পায়। পক্ষান্তরে নারীরা পায় ৮/৯ জায়গা থেকে। আর সব সময় তারা পুরুষের অর্ধেক সম্পদ পায় না; বরং কোন কোন জায়গায় তারা পুরুষের সমান পায় কোন কোন জায়গায় পুরুষ পায় না বরং তার স্থলে একই পর্যায়ের নারী থাকলে সে সম্পদ পায়। গড় হিসাব করতে গেলে তারা পুরুষের সমান; বরং পুরুষের চেয়ে বেশী পায়।
আরেকটি গুরুত্বপুর্ণ বিষয় পর্দা। এটা ইসলামের বানানো জিনিস নয়;বরং ইহুদী ও খৃষ্টান ধর্মেও পর্দার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
এ বইয়ের ভিতর ইসলাম ধর্ম এবং ইহুদী ও খৃষ্টান ধর্মে নারীদের অবস্থান ও মর্যাদার চিত্র ও বাস্তবতা তুলে ধরা হয়েছে। আশা করি পাঠকবৃন্দ এ বই থেকে উক্ত তিনটি ধর্মে বর্ণিত নারীদের অধিকার ও মর্যাদার যে চিত্র ফুটে উঠেছে তা জানতে পারবেন। পরিশেষে, সকল মুসলিম ভাইবোনের কাছে দোয়া চাচ্ছি আল্লাহ যেন আমাকে ভালো ভালো গ্রন্থ রচনা ও অনুবাদ করে মুসলিম জনগোষ্ঠির দুয়ারে সহজভাবে পৌছে দেয়ার তাওফিক দান করেন। আমীন।
বিনীত
তাং: ১৬ মার্চ ২০১০ ইং মুহাম্মদ ইসমাইল জাবীহুল্লাহ
আল-আযহার বিশ্ববিদ্যালয়, মিশর