Topic: কোনা ফাঁড়া পাঞ্জাবী হিন্দুদের পোশাক এবং হিন্দুরাই এর উৎপত্তিকারক
রমাদ্বান শরীফ মুসলমানদের জীবনে অবারিত রহমত, বরকত, ছাকীনা, মাগফিরাত, নাযাতের মাস। দীর্ঘ এক মাস সিয়াম সাধনার মাধ্যমে তাক্বওয়া হাছিলের এক অনন্য সম্ভার। এ মাসের পর পশ্চিমাকাশে বাঁকা চাঁদ অবলোকনের মাধ্যমে আনন্দের বারতা নিয়ে আসে ঈদুল ফিতর। এ ঈদে খুশি প্রকাশের জন্যে নতুন পোশাক কেনার ধুম পড়ে রমাদ্বান মাস থেকেই। আর এ উপলক্ষে সমস্ত মার্কেটগুলোতে রমাদ্বানের পবিত্রতার প্রতি নূন্যতম ভ্রূক্ষেপ না করে চলে অবাধ বেহায়াপনা-বেলেল্লাপনার হিড়িক। রমাদ্বানের পবিত্রতা রক্ষা করার চেয়ে ঈদ পালনই মুখ্য বিষয় হয়ে দাঁড়ায়। অথচ ঈদ তাদেরই জন্যে যারা রমাদ্বানের হক্ব তথা পবিত্রতা যথাযথভাবে আদায় করেছে। অন্য দিকে ঈদের কেনাকাটায় বেশিরভাগ মুসলমান পুরুষেরই প্রথম পছন্দ কোনা ফাঁড়া পাঞ্জাবী। অথচ তারা ঘুনাক্ষরেও চিন্তা করে না যে, পোশাকটি ইসলামে বৈধ কিনা।
ইতিহাস পর্যালোচনায় জানা যায় যে, বাদশাহ আকবর যে “দ্বীনে ইলাহী” প্রতিষ্ঠা করেছিল হিন্দুরাও তার সদস্য ছিল। হিন্দুরা তাদের চিরাচরিত প্রথানুযায়ী খোলা শরীরে ধুতি, পৈতা ও টিকলী পরিধান করেই বাদশাহর শাহী দরবারে আসা-যাওয়া করতো। বাদশা দেখলো এরূপ পোশাকহীন বা উলঙ্গ অবস্থায় বাদশাহর দরবারে প্রবেশ করা বাদশাহর শানের খিলাফ। তাই বাদশাহ তাদেরকে খোলা শরীরে এবং খালি মাথায় শাহী দরবারে আসতে নিষেধ করলো এবং পোশাক পরিধান করে আসার নির্দেশ দেয় তবে মুসলমানদের খেলাফ পোশাক ব্যবহার করতে বলে। তখন হিন্দুরা শলা-পরামর্শ করে সিদ্ধান্ত নিল তারা পোশাক পরেই শাহী দরবারে যাবে। তবে মুসলমানগণের পোশাক পরে নয়। সেটা হবে মুসলমানগণের খিলাফ; স্বতন্ত্র এক পোশাক।
স্মর্তব্য যে, মুশরিক তথা হিন্দুরা যে মুসলমানদের চিরশত্রু তা স্বয়ং মহান আল্লাহ পাক তিনিই কুরআন শরীফ-এ ইরশাদ করেছেন,
لَتَجِدَنَّ اََشَدَّ النَّاسِ عَدَاوَةً لِّلَّذِينَ آمَنُوا اليَهُودَ وَالَّذِينَ اَشْرَكُوا
অর্থ : “তোমরা তোমাদের সবচেয়ে বড় শত্রু হিসেবে পাবে ইহুদীদেরকে। অতঃপর যারা মুশরিক তাদেরকে।” (সূরা মায়িদা-৮২)
মুসলমানদের সাথে ইহুদী ও মুশরিকদের শত্রুতা চিরদিনের। তারা কখনো মুসলমানদেরকে বন্ধু হিসেবে গ্রহণ করে না। সবসময় বিরোধীতায় লিপ্ত। শত্রুতাবশত প্রতিটি ক্ষেত্রে মুসলমানদের বিপরীত কাজ করে থাকে। তাই মুসলমানগণের চিরশত্রু সেই হিন্দু সম্প্রদায় সিদ্ধান্ত গ্রহণ করলো তারা মুসলমানগণের মত লম্বা ও ঢিলা ঢালা জামা পরিধান করবে না। আর ইহুদী-নাছারাদের মত শার্ট, প্যান্ট, টাইও পরবে না। তারা কোনা ফাঁড়া খাটো পাঞ্জাবী পরিধান করবে।
কারণ দু’টি-(১) মুসলমানদের কোর্তা গোল বিধায়, তারা কোনা ফাঁড়া পাঞ্জাবী ব্যবহার করবে, যেন মুসলমানদের সাথে মিল না হয়।
(২) তারা যেহেতু ধুতি পরিধান করে তাই ধুতির লেজকে পাঞ্জাবীর পকেটে রাখতে সহজ হবে। কেননা পাঞ্জাবীর কোনা যদি ফাঁড়া না হয় তবে ধুতির লেজ পকেটে ঢুকানো হলে পাঞ্জাবী উঠে থাকে। সেজন্যে তারা কোনা ফাঁড়া পাঞ্জাবী ব্যবহার করে, এতে ধুতীর লেজ পাঞ্জাবীর পকেটে রাখলেও পাঞ্জাবী উঠে থাকলো না।
আবার মুসলমানরা যেহেতু গোল টুপি ব্যবহার করতো সেহেতু তারা লম্বা টুপি অর্থাৎ দোপাট্টা বা কিস্তি টুপিকে গ্রহণ করার সিদ্ধান্ত নিলো।
তখন থেকে হিন্দুরা কোনা ফাঁড়া পাঞ্জাবী এবং দোপাট্টা বা কিস্তি টুপি পরে বাদশাহের শাহী দরবারে যাতায়াত করতে থাকে। অদ্যাবধি হিন্দুরা সেই কোনা ফাঁড়া পাঞ্জাবী এবং ধুতিকে অত্যন্ত সম্মানজনক ও সম্ভ্রান্ত পোশাক মনে করে বিধায় কোনা ফাঁড়া পাঞ্জাবী পরে ধুতির লেজ কোনার ফাঁক দিয়ে পকেটে রেখে দিতে অনেক স্বাচ্ছন্দ বোধ করে। অতএব, প্রমাণিত হলো যে, লম্বা বা কিস্তি টুপি ও কোনা ফাঁড়া পাঞ্জাবী হিন্দুদেরই পোশাক এবং তারাই এর উৎপত্তিকারক।
আর হুজ্জাতুল ইসলাম, হযরত ইমাম গাজ্জালী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি উনার বিখ্যাত কিতাব “আল মুর্শিদুল আমীন” কিতাবে লিখেন, ইবলীস যখন হযরত মূসা কালিমুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার সাথে সাক্ষাৎ করে, তখন ইবলীসের মাথায় লম্বা টুপি ছিল।
তাহলে মুসলমানদের চিন্তা করা উচিত যে, এই কোনা ফাঁড়া পাঞ্জাবী ও লম্বা টুপি পরিধান করে মুসলমানদের চির শত্রু হিন্দুদের সাথে মিল রাখবে নাকি নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সুন্নতের অনুসরণে গোল ক্বমীছ বা কোর্তা ও চার টুকরা বিশিষ্ট গোল টুপি পরিধান করবে। কেননা মহান আল্লাহ পাক তিনি বলেছেন,
لَقَدْ كَانَ لَكُمْ فِي رَسُولِ اللَّهِ أُسْوَةٌ حَسَنَةٌ
অর্থ : “নিশ্চয় তোমাদের জন্যে মহান আল্লাহ পাক উনার রসূল নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহ উনার মধ্যে উত্তম আদর্শ রয়েছে।” (সূরা আহযাব, আয়াত শরীফ : ২১)
আর হাদীছ শরীফ-এ ইরশাদ হয়েছে,
عَنْ حَضَرَتْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عُمَرَ رَضِىَ اللهُ تَعَالى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَنْ تَشَبَّهَ بِقَوْمٍ فَهُوَ مِنْهُمْ
অর্থ : হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ করেন, যে ব্যক্তি যে সম্প্রদায়ের সাথে সাদৃশ্য বা মিল রাখবে, সে ব্যক্তি তাদেরই দলভুক্ত হবে। অর্থাৎ তার হাশর-নশর তাদের সাথেই হবে। (আবু দাউদ, মুসনাদে আহমদ)
চিত্র : হিন্দু-মুশরিকদের ব্যবহৃত কিস্তি টুপি, যা মুসলমানদের জন্যে ব্যবহার করা সম্পূর্ণ হারাম
চিত্র : হিন্দু-মুশরিকদের ব্যবহৃত ধুতিসহ কোনা ফাঁড়া পাঞ্জাবী, যা মুসলমানদের জন্যে ব্যবহার করা সম্পূর্ণ হারাম