(edited by Julhaz 2012-06-03 12:36:39)

Topic: ‘কা’বা শরীফ’ থেকে প্রাইম মেরিডিয়ান স্থির করে সকল ‘টাইম জোন’ নির্ধারণ

আমাদের মুসলমানদের প্রতিদিনের নামাযের সময়সূচি তৈরি হয় সূর্যের অবস্থানের উপর ভিত্তি করে। সূর্যের অবস্থানের সাথে প্রতিটি দেশের স্থানীয় সময় নির্ভরশীল। আর প্রতিটি দেশের স্থানীয় সময় নির্ধারিত হয়েছে গ্রীনিচের সময়কে আদর্শ সময় ধরে। উদাহরণস্বরূপ বাংলাদেশের স্থানীয় সময় যখন দুপুর ১২টা তখন লণ্ডনে স্থানীয় সকাল ৬টা। অর্থাৎ GMT সময়ের সাথে ৬ ঘন্টা যোগ করে বাংলাদেশের স্থানীয় সময় নির্ধারণ করা হয়। নাঊযুবিল্লাহ!
সূর্য যখন কোন স্থানের ঠিক মাথার উপরে আসে তখন মধ্যাহ্ন হয়, একে বলে Sun Time। পরের দিন সূর্য যখন আবার মাথার উপর আসবে তখন আবার মধ্যাহ্ন হবে। কিন্তু  ঘড়ি অনুযায়ী অর্থাৎ Clock Time অনুযায়ী একই সময়ে মধ্যাহ্ন হয় না। এই সূর্য সময় এবং ঘড়ি সময়ের সর্বোচ্চ পার্থক্য হয় তাসি’ (ফেব্রুয়ারি) মাসে ১৪ মিনিটের মত তখন ঘড়ির সময়ের চেয়ে সূর্য সময় ১৪ মিনিট পিছিয়ে থাকে। আবার সাদিস মাসে (নভেম্বরে) সময়ের পার্থক্য হয় সর্বোচ্চ ১৬ মিনিট; তখন সূর্য সময় ঘড়ির সময়ের চেয়ে এগিয়ে থাকে। এ সকল অসুবিধা দূর করার জন্যে এখন Atomic Clock ব্যবহার করা হয়।  এই Atomic Clock-এর সময় অনুযায়ী তৈরি হয়েছে UTC (Co-ordinated Universal Time)। ফলে ১৩৩৯ শামসী সনের ৩রা সামিন (১৯৭২ ঈসায়ী সনের ১লা জানুয়ারি) থেকে GMT-এর পরিবর্তে UTC ব্যবহৃত হচ্ছে। কিন্তু গ্রীনিচের উপর দিয়ে প্রাইম মেরিডিয়ান কল্পনা করায় তার সাপেক্ষে বিভিন্ন অঞ্চলের স্থানীয় সময় GMT-এর পরিবর্তে UTC হলেও সময় অঞ্চলগুলোর বিভক্তি পূর্বের মতই রয়ে গেছে।
কিন্তু কোন মুসলমান কি কখনো ভেবে দেখেছে কেন গ্রীনিচ থেকে প্রাইম মেরিডিয়ান কল্পনা করা হয়েছে? মূলত: কোন বিখ্যাত এবং ঐতিহাসিক স্থান বলে গ্রীনিচ থেকে প্রাইম মেরিডিয়ান কল্পনা করা হয়নি বরং এর পেছনে ছিল রাজনৈতিক কারণ। এক সময় ব্রিটিশরা পৃথিবীতে অন্যায়ভাবে আধিপত্য বিস্তার করতে পেরেছিল বলে তারা যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তায় গ্রীনিচ থেকে সময় নির্ধারণের বিষয়টি পৃথিবীর উপর চাপিয়ে দিয়েছে। অথচ গ্রীনিচের পূর্বেও ব্রাসেলস, কোপেনহেগেন, আলেকজান্দ্রিয়া, জেরুজালেম, মাদ্রিদ, প্যারিস এ সকল এলাকাও প্রাইম মেরিডিয়ান হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে। ফ্রান্স বহুদিন যাবৎ গ্রীনিচকে প্রাইম মেরিডিয়ান হিসেবে স্বীকৃতি দেয়নি এবং প্যারিসকে প্রাইম মেরিডিয়ান ধরেই গণনা করতো। পরবর্তীতে গ্রীনিচকে মেনে নিয়ে GMT ব্যবহার শুরু করলেও পরবর্তীতে আবার সে চলে যায় CET (Central European Time)-এ ।
পৃথিবী পৃষ্ঠের কোন স্থানে দাঁড়িয়ে কেউ যদি বলে আমি পৃথিবীর কেন্দ্রে আছি তার দাবি একদিক থেকে সত্য। কেননা, সেই স্থানের ডানদিক থেকে যে কয়টি দ্রাঘিমা পেরিয়ে সে তার অবস্থানে আসতে পারবে একইভাবে বামদিক থেকে ঠিক সে কয়টি দ্রাঘিমা পেরিয়ে আবার পূর্বের অবস্থানে ফিরে আসতে পারবে। সুতরাং পৃথিবীর যে কোন স্থানের উত্তর-দক্ষিণ মেরুর সংযোজক রেখাকে মূল মধ্যরেখা হিসেবে কল্পনা করা যায়।
কেউ যদি পৃথিবীর কোন একটি স্থানে মূল মধ্যরেখা কল্পনা করে নেয় এবং সেই কল্পিত রেখার দু’পাশে পা প্রশস্ত করে দিয়ে ভাবে তার একটি পা পূর্ব গোলার্ধে এবং অন্য পা পশ্চিম গোলার্ধে তবে তার এ ধারণাটিও সত্য। যদিও তা আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত নয়। কেননা, সে স্থানের কোন ধর্মীয়, ঐতিহাসিক গুরুত্ব নেই। সুতরাং পৃথিবীর এমন একটি স্থানের উপর দিয়ে মূল মধ্যরেখা স্থির করা উচিত, যে স্থানটির ঐতিহাসিক এবং ধর্মীয় গুরুত্ব আছে। আর তা হচ্ছে কা’বা শরীফ। কা’বা শরীফ এমন একটি স্থান যে স্থানটি পৃথিবীর সবচেয়ে প্রাচীনতম। যে স্থানের পবিত্রতা অপরিসীম। যে স্থানটি পূর্ব-পশ্চিমে সবার কাছে পরিচিত এবং গুরুত্বসহকারে বিবেচিত।
সুতরাং পৃথিবীর কোন স্থানের উপর দিয়ে যদি প্রাইম মেরিডিয়ান স্থির করতে হয়, পৃথিবীর কোন স্থানের সময়কে প্রমাণ সময় ধরে যদি পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চলের সময় নির্ধারণ করতে হয়, তবে সেই স্থান হওয়া উচিত পবিত্র কা’বা শরীফ।
কেননা, মহান আল্লাহ পাক তিনি কালামুল্লাহ শরীফ-এ ইরশাদ করেন, নিশ্চয়ই সর্বপ্রথম যে ঘর মানব জাতির জন্যে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে তা তো ঐ ঘর যা মক্কা শরীফে অবস্থিত। উহা বরকতময় এবং বিশ্ববাসীর জন্য পথপ্রদর্শক। (সূরা আলে ইমরান-৯৬)
সুতরাং কা’বা শরীফ পৃথিবীর সবচেয়ে প্রাচীনতম স্থান। প্রশ্ন হতে পারে ইহুদী, খ্রিস্টানরা কেন মুসলমানদের বিষয়টি মেনে নিবে। প্রকৃতপক্ষে ইহুদী খ্রিস্টানরাও কা’বা শরীফ-এর অবস্থান, মান-মর্যাদা, ঐতিহাসিক গুরুত্ব সম্পর্কে ওয়াকিবহাল।
হযরত নূহ আলাইহিস সালাম উনার দুনিয়ার যমীনে অবস্থানের সময় মহা প্লাবনের পর হযরত ইব্রাহীম আলাইহিস সালাম তিনি এই পবিত্র কা’বা শরীফ-এর পুনঃনির্মাণ করেন। হযরত ইব্রাহীম আলাইহিস সালাম উনার দুই সন্তান হযরত ইসমাইল আলাইহিস সালাম এবং হযরত ইসহাক আলাইহিস সালাম উনাদেরকেও মহান আল্লাহ পাক তিনি নবী আলাইহিমাস সালাম হিসেবে কবুল করেন। হযরত ইসমাইল আলাইহিস সালাম উনার বংশধরদের মধ্য থেকে তাশরীফ নেন নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি এবং হযরত ইসহাক আলাইহিস সালাম উনার বংশধরদের মধ্য থেকে তাশরীফ নেন হযরত মুসা আলাইহিস সালাম এবং পরে হযরত ঈসা আলাইহিস সালাম উনারা। সুতরাং ইহুদী এবং খ্রিস্টানসহ সকল আহলে কিতাবের কাছেই কা’বা শরীফ-এর অপরিসীম গুরুত্ব রয়েছে।
সকল বর্ণের, সকল গোত্রের, সকল জাতির আদি পিতা হচ্ছেন হযরত আদম আলাইহিস সালাম তিনি। যিনি প্রথম মানুষ এবং নবী। উনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কোন কিছুর ইতিহাসের চেয়ে পুরনো কোন ইতিহাস নেই বা থাকতে পারে না। যদি কোন কারণে কোন স্থানকে ঐতিহাসিক গুরুত্বের কারণে নির্বাচন করা হয়, তবে প্রথম গুরুত্ব পাবে বাইতুল্লাহ শরীফ বা কা’বা শরীফ; যার চেয়ে ঐতিহাসিক কোন স্থান এই যমীনে নেই।
দ্বিতীয়ত: হাদীছ শরীফ-এ বর্ণিত হয়েছে- সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ করেন, “কা’বা শরীফ ছিল পানির উপর একটি ছোট পাহাড় এবং তার নিচ দিয়ে পৃথিবী সৃষ্টি হয়।”
অর্থাৎ কা’বা শরীফ-এর নিচের অংশটুকু ছিল পৃথিবীর প্রথম যমীন যা বিশাল সাগরের মাঝে সৃষ্টি হয়। পরবর্তীতে সেই পবিত্র স্থানের চতুর্পার্শ্বে তা বিস্তার লাভ করতে থাকে এবং প্রথমে একটি বিশাল মহাদেশের সৃষ্টি হয়। সে কারণে মক্কা শরীফকে বলা হয় “উম্মুল কুরা”। বিজ্ঞানও স্বীকার করেছে বর্তমানে যে সাতটি মহাদেশ আছে সেগুলো মূলতঃ একটি মহাদেশ আকারে ছিল; যাকে বলা হয় Mother Continent বা Pangaea। পরবর্তীতে এগুলো একে অপরের কাছ থেকে দূরে সরতে শুরু করে এবং সরতে সরতে বর্তমান অবস্থায় পৌঁছেছে।
হাদীছ শরীফ এবং বিজ্ঞানের মাধ্যমেও এটি স্পষ্ট যে, এই পৃথিবীর বিস্তৃতিও ঘটেছে কা’বা শরীফ থেকে। যেহেতু মহান আল্লাহ পাক তিনি এই কা’বা শরীফকে প্রথম সৃষ্টি করে মানব জাতির পথ প্রদর্শনের জন্য নির্ধারণ করলেন। কুরআন মজীদ প্রথম নাযিল হয় এই কা’বা শরীফকে ধারণকারী মক্কা শরীফ-এ। মক্কা শরীফ-এ প্রথম ইসলামের প্রচার শুরু হয় এবং প্রথম ইসলাম কবুলকারী হযরত ছাহাবা আজমাইন রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারাও মক্কা শরীফ-এর অধিবাসী। পরবর্তীতে পর্যায়ক্রমে ইসলাম পূর্বে-পশ্চিমে, উত্তর-দক্ষিণে পৃথিবীব্যাপী বিস্তার লাভ করেছে। এই কা’বা শরীফ থেকেই পৃথিবীর যমীন বিস্তার লাভ করেছে; তাহলে পৃথিবীর সকল ‘সময় অঞ্চল’ (Time Zone) কেন এই কা’বা শরীফ থেকেই চতুর্পার্শ্বে নির্ধারিত হবে না? বরং এটাই সত্য যে, কা’বা শরীফ-এর উপর দিয়ে প্রাইম মেরিডিয়ান স্থির করে পৃথিবীর সকল ‘সময় অঞ্চল’ (Time Zone) নির্ধারণ করলে তা কুরআন শরীফ এবং হাদীছ শরীফ-এর স্পষ্ট অনুসরণ করা হবে। তখন এর মধ্যে থাকবে রহমত, বরকত ও সাকিনা। সুতরাং মুসলমানদের উচিত কা’বা শরীফ-এর সময় সাপেক্ষে পৃথিবীর সকল দেশের বা সকল অঞ্চলের সময় নির্ধারণ করে কা’বা শরীফ-এর প্রতি পরিপূর্ণ আদব প্রকাশ করা।
তৃতীয়ত: পবিত্র কা’বা শরীফ-এর উপর দিয়ে প্রাইম মেরিডিয়ান স্থির করলে আন্তর্জাতিক তারিখ রেখার অবস্থান হয় সুবিধাজনক স্থানে। গ্রীনিচের উপরে প্রাইম মেরিডিয়ান স্থির করা অযৌক্তিক এবং প্রচলিত আন্তর্জাতিক তারিখ রেখাও আঁকাবাঁকা।
গ্রীনিচের উপর দিয়ে প্রাইম মেরিডিয়ান স্থির করায় আন্তর্জাতিক তারিখ রেখা নিয়েও সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে। প্রচলিত আন্তর্জাতিক তারিখ রেখা হচ্ছে ১৮০ ডিগ্রি পূর্ব এবং ১৮০ ডিগ্রি পশ্চিম দ্রাঘিমা রেখার সংযোগস্থলে। এই তারিখ রেখার পশ্চিমে রয়েছে উত্তর গোলার্ধে রাশিয়া এবং দক্ষিণ গোলার্ধে নিউজিল্যান্ড। এই তারিখ রেখা সরাসরি উত্তর গোলার্ধ থেকে দক্ষিণ গোলার্ধে নেমে যেতে পারেনি। যখনই জনবসতিপূর্ণ এলাকার উপরে এসেছে তখনি ঠেলে দেয়া হয়েছে পানির দিকে। ১৮০ ডিগ্রি দ্রাঘিমা রেখা বিচ্যুত সময় রেখার অংশগুলো হলো বেরিং প্রণালী, এলিউশিয়ান দ্বীপপুঞ্জের পশ্চিমাংশ, ফিজির পূর্বাংশ ইত্যাদি।
বর্তমান অবস্থানে আন্তর্জাতিক তারিখ রেখা থাকায় যে সমস্যাগুলো সৃষ্টি হয়েছে তার কিছু নমুনা দেয়া যেতে পারে।
ফিজি ১৮০ ডিগ্রি দ্রাঘিমার পশ্চিমে আর টোঙ্গা, সেমওয়া ১৮০ ডিগ্রি পূর্বে। আর কিরিবাতি দ্বীপকে ১৮০ ডিগ্রি দ্রাঘিমা রেখা দ্বি-ভাগ করেছে। কিন্তু ফিজি, টোঙ্গা এবং কিরিবাতি আন্তর্জাতিক তারিখ রেখার পশ্চিমে অবস্থান নিয়েছে আর সেমওয়া অবস্থান নিয়েছে আন্তর্জাতিক তারিখ রেখার পূর্বে। টোঙ্গা এবং সেমওয়ার সময় একই থাকলেও ১ দিনের পার্থক্য রয়েছে। আবার ফিজি এবং টোঙ্গা কাছাকাছি হলেও ফিজির সময় টোঙ্গার সময়ের চেয়ে ১ ঘণ্টা পিছিয়ে। আবার সেমওয়ার চেয়ে অনেক পূর্বে হাওয়াই দ্বীপের অবস্থান হলেও সময়ের পার্থক্য মাত্র ১ ঘণ্টা। এছাড়া ১৩৬২ শামসী (১৯৯৫ ঈসায়ী) সনের পূর্ব পর্যন্ত কিরিবাতি দ্বীপে তারিখ নিয়ে ছিল গরমিল। একই দ্বীপে দুইটি তারিখ প্রচলিত ছিল। কিরিবাতির পশ্চিমাংশ সবসময় পূর্বাংশ থেকে এক দিন এগিয়ে থাকতো। সপ্তাহের মাত্র ৪ দিন দুই অংশের মধ্যে ব্যবসায়িক কাজ কর্ম সম্পাদন হতো। এসব সমস্যার সমাধানের জন্য ১৩৬২ শামসী সনের ৩রা সামিন (১৯৯৫ ঈসায়ী সনের পহেলা জানুয়ারিতে) কিরিবাতির প্রেসিডেন্ট টিবুরোর টিটো আন্তর্জাতিক তারিখ রেখাকে কিরিবাতির পূর্বে সরিয়ে নেবার ঘোষণা দেয়।


http://www.sci.uidaho.edu/scripter/geog100/lect/01-foundations-of-geography/1-15-int-date-line.jpg


কিন্তু কা’বা শরীফ-এর উপর দিয়ে প্রাইম মেরিডিয়ান স্থির করলে ১৮০ ডিগ্রি দ্রাঘিমা বা আন্তর্জাতিক তারিখ রেখা যাবে আলাস্কা এবং কানাডার মাঝামাঝি স্থান দিয়ে (বর্তমান ১৪১ ডিগ্রি পশ্চিম দ্রাঘিমা রেখা বরাবর)। আন্তর্জাতিক তারিখ রেখা উত্তর প্রশান্ত মহাসাগর দিয়ে নিচে নেমে দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগর দিয়ে দক্ষিণ গোলার্ধে চলে যাবে। সম্পূর্ণ তারিখ রেখাটি যাবে পানির উপর দিয়ে ফলে স্থলভাগের ডানে ও বামে তারিখ রেখা সরিয়ে দেয়ার কোন প্রয়োজন পড়বে না।


http://muslimcalendar.files.wordpress.com/2010/07/world_map_with_comparison.jpg


http://reformer1500.files.wordpress.com/2012/04/date-panel.jpg%3Fw%3D690&imgrefurl=http://reformer1500.wordpress.com/page/6/&usg=__Ae15p2-XLFBGBTbbx_FLKHqNjq8=&h=724&w=580&sz=117&hl=bn&start=1&zoom=1&tbnid=b_QZmLjCocduaM:&tbnh=167&tbnw=134&ei=tevKT7fUKoTqrAf_rqW3Dg&prev=/search%3Fq%3Darctic%2Bocean%26hl%3Dbn%26sa%3DX%26biw%3D1280%26bih%3D586%26tbs%3Dsimg:CAQSYxphCxCo1NgEGgAMCxCwjKcIGjwKOggBEhT8BYAG_1gX9BdIGhAOPA50BsAGeARog21qLefjUOlaHyriVu_1hbWoO35SILJJy524hkyqiGCjoMCxCOrv4IGgoKCAgBEgShgAJaDA%26tbm%3Disch&itbs=1&iact=rc&dur=274&sig=109609351208343790210&page=1&ved=1t:429,r:0,s:0,i:46&tx=76&ty=58


সুতরাং কা’বা শরীফ-এর উপর দিয়ে প্রাইম মেরিডিয়ান স্থির করা সহজেই সম্ভব এবং যুক্তিসঙ্গত। তখন আন্তর্জাতিক তারিখ রেখাসহ সকল বিষয়ের সহজ সমাধান পাওয়া যাবে। মহান আল্লাহ পাক তিনিতো পূর্বেই ইরশাদ করেছেন “কা’বা শরীফ মানব জাতির জন্য পথ প্রদর্শক।”
এছাড়া মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ করেন, “তোমরা কাফির, মুনাফিকদের অনুসরণ করোনা অর্থাৎ ইহুদী, মুশরিক ও নাছারা এবং মুনাফিকদেরকে অনুসরণ-অনুকরণ করো না।”
আর হাদীছ শরীফ-এ ইরশাদ হয়েছে, “যে ব্যক্তি যে সম্প্রদায়ের অনুসরণ করবে সে ব্যক্তি তাদেরই দলভুক্ত বলে গণ্য হবে।”
কাজেই মুসলমানদের জন্য সময় নির্ধারণের ক্ষেত্রেও কাফির, মুশরিক, ইহুদী-নাছারাদের অনুসরণ করা কস্মিনকালেও শরীয়তসম্মত হবে না। সুতরাং গ্রীনিচের পরিবর্তে প্রথম যমীন কা’বা শরীফ যা ইহুদী-নাছারাসহ সকলেরই রসূল হযরত ইবরাহীম আলাইহিস সালাম উনারও ক্বিবলা তা থেকে পৃথিবীর সকল মানুষের জন্য সমস্ত স্থানের সময় নির্ধারণ করা উচিত। সুতরাং পৃথিবীর সোয়া ৩০০ কোটি মুসলমানের এ বিষয়ে সজাগ ও সোচ্চার হওয়া উচিত।
মুসলমানদেরকে ইহুদী, মুশরিক ও নাছারাদের GMT-র অনুসরণ থেকে বাঁচাতে এই অনবদ্য তাজদীদ (সংস্কার) যিনি করেছেন তিনি হচ্ছেন বর্তমান পনেরশত হিজরী শতকের যিনি ইমাম ও মুজাদ্দিদ, মুজাদ্দিদে আ’যম, ঢাকা রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি।


http://2.bp.blogspot.com/_SZ4t8fF367Q/TJejdAVIDfI/AAAAAAAAA28/BotH8NNN0v8/s1600/Mohan+Tajdeed+K.M.T+%5BConverted%5D.jpg


সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হাদীছ শরীফ-এ ইরশাদ করেন, “হযরত আবূ হুরায়রাহ রদ্বিয়াল্লাহু আনহু তিনি এ ব্যাপারে সর্বাধিক অবগত যে, আখিরী রসূল, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ করেন, নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক তিনি উম্মতে মুহম্মদীর জন্যে প্রত্যেক হিজরী শতকের শুরুতে একজন ব্যক্তিকে (মুজাদ্দিদ উনাকে) প্রেরণ করবেন, যিনি তাদের দ্বীন তথা আক্বীদা ও আমলের তাজদীদ বা সংস্কার করবেন।” (আবূ দাউদ শরীফ, মিশকাত শরীফ)
হাদীছ শরীফ-এ বর্ণিত মুজাদ্দিদ উনাদের আগমণের ধারাবাহিকতায় বর্তমান পনেরশত হিজরী শতকের যিনি মুজাদ্দিদ তিনি হচ্ছেন, খলীফাতুল্লাহ, খলীফাতু রসূলিল্লাহ, ইমামুশ শরীয়ত ওয়াত তরীক্বত, ইমামুল আইম্মাহ, মুহইস সুন্নাহ, কুতুবুল আলম, মুজাদ্দিদে আ’যম, হুজ্জাতুল ইসলাম, ছাহিবু সুলত্বানিন নাছীর, হাবীবুল্লাহ, আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি।
অন্য হাদীছ শরীফ-এ ইরশাদ হয়েছে, “যে ব্যক্তি তার যামানার ইমামকে চিনলো না সে জাহিলিয়াতের মৃত্যুর ন্যায় মৃত্যুবরণ করলো।” (মুসলিম শরীফ, আক্বঈদে নাসায়ী)
আর যামানার ইমাম তথা ওলীআল্লাহ উনাদের বিরোধিতা প্রসঙ্গে হাদীছে কুদসী শরীফে ইরশাদ হয়েছে, “যে ব্যক্তি কোন ওলীআল্লাহ উনার সঙ্গে বিদ্বেষ পোষণ করে স্বয়ং আমি (আল্লাহ পাক) তার সঙ্গে জিহাদ ঘোষণা করি।” (বুখারী শরীফ)
এছাড়া ওলীআল্লাহ উনাদের সম্পর্কে মহান আল্লাহ পাক তিনি কুরআন শরীফে ইরশাদ করেন, “সাবধান! নিশ্চয়ই যারা আল্লাহ পাক উনার ওলী উনাদের কোন ভয় নেই এবং চিন্তা-পেরেশানীও নেই।” (সূরা ইউনূছ: আয়াত শরীফ ৬২)
সুতরাং আমরা যেন সকলে যামানার ইমাম উনাকে চিনতে পারি এবং উনার হাতে বাইয়াত হয়ে সমাজে প্রচলিত যাবতীয় বদ ও কুফরী আক্বীদা, বিদয়াত-বেশরা ও শরীয়ত বিরোধী কুসংস্কারমুলক আমল সমুহ হতে তওবা করে, ছহীহ্ আক্বীদা ও সুন্নতের আমল সমূহে অভ্যস্ত হওয়ার মাধ্যমে মহান আল্লাহ পাক ও উনার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের হাক্বীক্বী মুহব্বত-মারিফাত হাছিল করতে পারি এবং নাযাত লাভ করতে পারি, মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদের সেই তাওফীক দান করেন। (আমীন)