Topic: সুন্নতে খাৎনা!
বাবা কি কারণে জানি আমাদের সব ভাইদের একসাথে মোসলমানি করাতে হাসতাপাতলে নিয়ে গেলেন। বড় ভাই লুঙ্গি পড়ে অপারেশন রুমে গেলো। আধা ঘন্টা পর কাদতে কাদতে বের হয়ে আসলো। আমি হতবাক হয়ে ভাবতে থাকলাম কাদছে কেন?
তারপর আমার মেঝো ভাই গেলো সে গিয়েই অপারেশন রুমকে মাছের বাজারে পরিনত করে ফেললো। কি যে হইচই আর চিৎকার। সে পুরো হাসপাতালকে মাথায় উঠিয়ে কাদতে থাকলো।
এবার আমার পালা। হায় আল্লাহ। কি করি? দিলাম দৌড়। আমার পিছু পিছু নার্স, ডাক্তার, বড় আপি, ছোট আপি, আব্বু, আম্মু দৌড়াতে থাকলো। বেশিক্ষন লুকোচুরি, দৌড়াদৌড়িতে টিকতে পারলাম না। এক নার্স আমাকে কোলে তুলে অপারেশন চেম্বারে প্রবেশ করলো।
আমার পরনে তখন ছোট হাফ প্যান্ট। ডাক্তার হিসেবে ছিলেন একজন মেয়ে। সে আমাকে বললো- লক্ষ্যি বাবু! কাপড় খুলো তো?
আমি অবাক হয়ে বললাম- কেন? কাপড় খুলবো কেন?
এমনি! খোল বাবু।
আমি কঠিন ভাবে বললাম- আমি বাবু নই; আমি পলাশ।
আচ্ছা পলাশ বাবু। লক্ষি বাবু কাপড় খোল।
আমি আবারো বললাম- আমি শুধু মাত্র পলাশ। বাবু নই। বাবু আমার বড় ভাই। দাড়ান তাকে পাঠিয়ে দিচ্ছি। আমি কাপড় খুলবো না।
ডাক্তার মেয়ে কঠিন ভাবে বললো- না খুললে এই কাচি দিয়ে কেটে ফেলবো। বলেই একটা ধারালো কাচি আমার চোখের সামনে নাচাতে থাকলো। আমার এতো শখের প্যান্ট। এভাবে তো কেটে ফেলতে দিতে পারি না। আমি বললাম- ঠিক আছে খুলছি।
ডাক্তার আমার অপারেশন করতে থাকলো। আমি কিছুক্ষন পর পর মাথা উচু করে দেখছি ডাক্তার কি করছে। তিনি বার বার আমাকে ধমক দিচ্ছেন- বাবু চোখ বন্ধ করো। ভয় পাবা।
আমি ধমক খেয়ে কিছুক্ষন চোখ বন্ধ করে আবারো দেখতে থাকলাম উনি কি করছেন। তিনি আবারো আমাকে ধমক দিলেন।
সকল কিছু শেষ হবার পর ডাক্তার মেয়ে আমাকে কোলে করে বারান্দায় নিয়ে আসলেন। বাবা-মা, ভাই, বোন সবাই দাড়িয়ে আছে বারান্দায়। ডাক্তার আব্বুকে বললো- আপনার এই ছেলে তো অনেক সাহসী। একটুও কাদে নি বরং বারবার দেখছিলো কি করি।
আমি এ কথা শুনে চিৎকার করে কান্না শুরু করে দিলাম। ডাক্তার মেয়ে আমাকে কোলে নিয়ে অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে। তিনি অবাক হয়ে বললেন- কি হযেছে বাবু? কাদছো কেন?
আমি কান্নার পরিমান আরো বাড়ালাম। প্রশ্ন শুনে দ্বিগুন উদ্দমে কান্না শুরু করছি। ছোট আপু আমাকে খোচা মেয়ে কানে কানে বললো- কি ব্যাপার? এখন তুই কাদচ্ছিস কেন?
আমি কাদতে কাদতে বললাম- তখন যে কাদতে হবে আমাকে কেউ মনে করিয়ে দেয় নি। তাই এখন কাদছি।
এলোমেলো আকাশে উড়িয়েছো শাড়ির আচল,
হঠ্যাৎ যেন মেখে দিয়েছো, ঐ দু'চোখে ভালোবাসার কাজল!
আমাকে পাবেন এলোমেলো-তে!!!