Topic: কিডনির অসুখে রক্তের পরীক্ষা
কিডনির অসুখে রক্তের পরীক্ষা
কিডনি কতটুকু ভালো আছে তা বোঝার জন্য রক্তের কয়েকটি পরীক্ষা প্রায়ই করা হয়। কারণ রক্ত শুদ্ধ করে কিডনি। যদি রক্তে ক্ষতিকর উপাদানের মাত্রা বেড়ে যায়, তাহলে ধরে নেওয়া যায় কিডনি তার কাজ করতে পারছে না বা তার কাজে সমস্যা হচ্ছে।
সেরাম ক্রিয়েটিনিন
সেরাম ক্রিয়েটিনিন হলো এক ধরনের উপজাত, যা মাংসপেশির বিপাকক্রিয়ায় উৎপন্ন হয়। এটি রক্ত থেকে কিডনি বা বৃক্কের মাধ্যমে নিষ্কাশিত হয়। কিডনির কার্যকারিতা স্বাভাবিক থাকলে রক্তে এর পরিমাণ স্বাভাবিক ও অপরিবর্তনীয় থাকে (০.৮-১.২ মিলিগ্রাম/ডেসিলিটার)। এর পরিমাণ বাড়তে থাকলে বুঝতে হবে কিডনির নেফ্রনগুলো সঠিকভাবে কাজ করছে না।যাদের দরকার
উন্নত বিশ্বে এটি রুটিন টেস্ট বা সাধারণ পরীক্ষা হিসেবে সবাইকে করতে বলা হয়। বাংলাদেশে চলি্লশোর্ধ্ব যেকোনো অসুখে আক্রান্ত রোগীর ক্ষেত্রে এই টেস্ট করা হয়।
কিভাবে করাবেন
যেকোনো সময়ই পরীক্ষার জন্য রক্ত দেওয়া যায়। খাওয়ার আগে বা পরে রক্ত দেওয়া যায়। খালি পেটে রক্ত পরীক্ষা করতেও সমস্যা নেই।
কী কারণে করতে হয়
কিডনি কার্যক্ষম থাকলে অর্থাৎ ৫০ শতাংশ নেফ্রন (কিডনির গঠন ও কার্যের একক) কার্যকর থাকলেও মানুষ সুস্থ ও স্বাভাবিকভাবে কাজ করতে পারে। তাই ক্রিয়েটিনিন বাড়লে বুঝতে হবে কোনো অ্যাকিউট বা ক্রনিক কারণে ওই ব্যক্তির ৫০-৬০ শতাংশ নেফ্রন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সেরাম ক্রিয়েটিনিন পরীক্ষায় কতটুকু নেফ্রন ইতিমধ্যেই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তা বোঝা যায়।
ব্লাড ইউরিয়া নাইট্রোজেন
ইউরিয়া যকৃতে তৈরি হয় এবং কিডনি দিয়ে নিষ্কাশিত হয়। এটি স্বাভাবিকভাবে ৮-২০ মিলিগ্রাম/ডেসিলিটার। কিডনির অকার্যকারিতার ফলে এটি বেড়ে যায়। তবে যেহেতু এটি আমিষজাতীয় খাদ্য গ্রহণ ও লিভারের কার্যক্ষমতার কারণেও পরিবর্তিত হয়, তাই এটি শুধু কিডনির সুনির্দিষ্ট পরীক্ষা নয়; লিভার বা যকৃতেরও পরীক্ষা।
ক্রিয়েটিনিন ক্লিয়ারেন্স টেস্ট
খুব গুরুত্বপূর্ণ ও কিডনি কার্যকারিতার সুনির্দিষ্ট পরীক্ষা বলা হয় এটিকে। এই পরীক্ষায় রক্ত ও প্রস্রাব দুটিরই প্রয়োজন হয়। রক্তের নির্দিষ্ট পরিমাণ ক্রিয়েটিনিন প্রতি একক সময়ে কী পরিমাণে মূত্রের মাধ্যমে নিষ্কাশিত হচ্ছে, তা এ পরীক্ষায় বোঝা যায়। এভাবে জানা যায় কিডনি কত ভালোভাবে কাজ করছে। স্বাভাবিক মাত্রা ৭০-১৪০ মিলিলিটার/মিনিট।
ডা. সাবরিনা শারমিন
রেসিডেন্ট, বিএসএমএমইউ, ঢাকা
সুত্র