Topic: অক্টোপাস গুনিন পলের ভবিষ্যৎ কী?
বিশ্বকাপজয়ী স্পেনও এবারের টুর্নামেন্টে একটি ম্যাচে হেরেছে। কিন্তু বিশ্বকাপের আটটি খেলা নিয়ে ভবিষ্যৎ বক্তা অক্টোপাস পলের ভবিষ্যদ্বাণীর একটিও ভুল হয়নি। একটা-দুটো খেলার ফল নিয়ে পূর্বাভাস সঠিক হওয়ার ঘটনা কাকতালীয় হতে পারে। কিন্তু আটটি পূর্বাভাসই সঠিক হওয়ার পর অনেকেই ধরে নিয়েছেন, অতিপ্রাকৃত কোনো ক্ষমতা রয়েছে অক্টোপাসটির।
ভবিষ্যৎ বক্তা হিসেবে জনপ্রিয় হয়ে ওঠা এই অক্টোপাসের জন্ম ২০০৮ সালের জানুয়ারিতে ইংল্যান্ডের ওয়েমাউথের একটি সি লাইফ সেন্টারে। এখনকার আবাসস্থল জার্মানির ওবেরহয়জেনে একটি সি লাইফ সেন্টারের অ্যাকুরিয়ামে। জার্মান কবি বয় লোরজেনের লেখা ‘ডের টিনটেনফিশ পল অক্টোপাস’ নামের কবিতার নামানুসারে অক্টোপাসটির নাম রাখা হয়েছে পল।
খেলার ফল নিয়ে সঠিক পূর্বাভাস দেওয়ার পর থেকে আন্তর্জাতিকভাবে খ্যাতি পায় পল। এই আন্তর্জাতিক খ্যাতির কারণে এখন অনেকেই পলের মালিকানা পেতে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। সম্প্রতি স্পেনের স্থানীয় ব্যবসায়ীরা পলকে জার্মানি থেকে স্পেনে নিয়ে আসার জন্য ৩০ হাজার ইউরো দিতে চেয়েছেন। ইতালির লোকজন প্রমাণ করার চেষ্টা করছে, পলকে ইতালির জলসীমা থেকে ধরা হয়েছে। স্পেনের প্রধানমন্ত্রীও পলকে রক্ষা করার আগ্রহের কথা জানিয়েছেন।
ভবিষ্যৎ বক্তা হিসেবে পলের পরিচয় প্রকাশ পায় ২০০৮ সালের উয়েফা ইউরো টুর্নামেন্টের সময়। ওই সময় জার্মানির ছয়টি খেলার পূর্বাভাস জানায় পল। এর মধ্যে চারটি ঠিক হয়, ভুল হয় দুটি। এখন পর্যন্ত সব মিলিয়ে পলের ১৪টি খেলা নিয়ে পূর্বাভাসের মধ্যে ভুল বলতে ওই দুটিই।
পল কীভাবে দুটি দলের মধ্যে বিজয়ী দলকে বেছে নেয়, তার সুনির্দিষ্ট কোনো ব্যাখ্যা পাওয়া যায়নি। হয়তো খাবারের গুণ-মানের ভিত্তিতে বা পতাকার রঙের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে বিজয়ীকে নির্দেশ করে অক্টোপাসটি। কিন্তু ভালগারিস প্রজাতির এই অক্টোপাস সাধারণত বর্ণান্ধ।
যুক্তরাজ্যের ব্যাংগোর ইউনিভার্সিটির গবেষক শেলাঘ ম্যালহাম বলেন, এ ধরনের অক্টোপাসগুলো আনুভূমিক ডোরা বা রেখার প্রতি আকৃষ্ট হয়। জার্মানির পতাকায় চওড়া ডোরা রয়েছে। এ ছাড়া স্পেনের পতাকায় উজ্জ্বল হলুদ ডোরা ও সার্বিয়ার পতাকার সাদা ও নীল রঙের বৈচিত্র্যও ওই দুই দেশের পতাকার প্রতি পলকে আকৃষ্ট করে তুলতে পারে। কিন্তু পলের আচরণকে নিয়মতান্ত্রিকভাবে পরীক্ষা করা যেত, যদি সেটি কয়েকবার একই ধরনের বাক্স পছন্দ করত। কিন্তু তা করার উপায় নেই। কারণ প্রতি খেলায় পল মাত্র একটি বাক্স পছন্দ করে।
কিন্তু এখন বিশ্বকাপ শেষ হয়ে গেছে। পলের ভবিষ্যৎ কী? যেটুকু তথ্য পাওয়া গেছে, তা থেকে বলা যায়, অক্টোপাসটি জীবনের বাকি সময়টুকু সম্ভবত ওবেরহয়জেনে সি লাইফ সেন্টারের অ্যাকুরিয়ামেই পার করবে। তাকে সামনের দিনগুলোতে হয়তো আর পতাকাযুক্ত খাবারের বাক্স থেকে খাবার খেতে হবে না এবং তাকে ঘিরে সংবাদমাধ্যমের কর্মীদের ভিড়ও থাকবে না। অবসর সময়টি হয়তো অ্যাকুরিয়ামের পানিতে সাঁতার কেটেই পার করতে হবে পলকে। একজন বিজয়ী হিসেবে পলের এই অবসর গ্রহণকে স্বাগত।
সূত্র: এখানে
আমার হৃদয় রেখে যেতে চাই, তাদের সৃতির চরণে