Topic: রাষ্ট্রপতির হেলিকপ্টার নামবে, তাই বৃক্ষ নিধনযজ্ঞ!

http://j.imagehost.org/t/0819/image_179_60371.jpg
রাষ্ট্রপতি মো. জিল্লুর রহমান 'নাগরিক সংবর্ধনা' নিতে নিজের নির্বাচনী এলাকা কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচরে আসছেন আজ রবিবার। তাঁর হেলিকপ্টার অবতরণের জন্য অস্থায়ীভাবে দুটি হেলিপ্যাড বানানো হয়েছে। কিন্তু এর চারপাশের শতাধিক গাছ কেটে ফেলা হয়েছে। এর মধ্যে কুলিয়ারচর ডিগ্রি কলেজ মাঠজুড়ে লাগানো প্রায় ১০০ ছোট-বড় গাছ সম্পূর্ণ কেটে ফেলা হয়। এ ছাড়া থানার মাঠের চারপাশের আরো ১০-১২টি বড় গাছের ডালাপালা কাটা হয়। শুক্রবার বিকেল থেকেই গাছ কাটা শুরু হয়। গতকাল শনিবার বিকেল পর্যন্ত গাছ নিধন চলছিল।
গতকাল দুপুরে কুলিয়ারচর ডিগ্রি কলেজ এলাকায় গিয়ে চোখে পড়ে এই নিধনযজ্ঞ। ৫০-৬০ জন নারী ও পুরুষ শ্রমিক কাজ করে চলেছেন। ঠ্যালা ও ভ্যানে করে কাটা গাছের ফালি ও ডালপালা কলেজ চত্বরের বাইরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। কলেজের পূর্ব পাশের গেট থেকে দক্ষিণের গেট পর্যন্ত একটি গাছও আর অবশিষ্ট নেই। সবই কাটা হয়ে গেছে। কলেজের উত্তর পাশের ৫০-৬০টি গাছ রক্ষা পেলেও এগুলোর সব ডালপালা কেটে ফেলা হচ্ছে। গাছ নিধনের এ ঘটনা এলাকাবাসীকে ক্ষুব্ধ করলেও কেউ মুখ ফুটে কিছু বলছে না। থানার মাঠে গিয়ে দেখা যায়, মাঠের চারপাশের ১০-১২টি বড় গাছের ডাল কেটে ফেলা হচ্ছে।
কলেজ কর্তৃপক্ষ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার দুপুর ১২টার দিকে বিমানবাহিনীর একটি হেলিকপ্টার কলেজ মাঠে অবতরণ করে। এসএসএফের (স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্স) হেলিকপ্টার উইংয়ের গ্রুপ
ক্যাপ্টেন মোস্তাফিজুর রহমান কলেজের অধ্যক্ষকে কলেজ চত্বরের সব গাছ বাউন্ডারি দেয়ালের এক ফুট নিচু করে কেটে ফেলার নির্দেশ দেন। অধ্যক্ষ প্রথমে আপত্তি জানালে ওই অফিসার তাঁকে এক ঘণ্টার মধ্যে গাছগুলো কাটতে বলেন। পরে ওই অফিসার একটি সাদা কাগজে মানচিত্র এঁকে গতকাল বিকেল ৫টার মধ্যে গাছ কাটার লিখিত নির্দেশ দিয়ে যান। জানা যায়, ওই সময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাও কলেজ কর্তৃপক্ষকে মৌখিকভাবে গাছ কেটে ফেলতে বলে যান।
পরে কলেজ কর্তৃপক্ষ বিকেলেই কলেজ পরিচালনা কমিটির জরুরি সভা আহ্বান করে। ওই সভায় 'রাষ্ট্রপতির সম্মানার্থে কলেজের মনোরম পরিবেশ ধ্বংস করে গাছ কাটার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়' বলে কর্তৃপক্ষ জানায়। পরে ওই দিনই সন্ধ্যায় কলেজ চত্বরে খোলা ডাকের ব্যবস্থা করা হয়। ডাকে অংশ নিয়ে পূর্ব গাইলকাটার গাছ ব্যবসায়ী মো. নাজিমউদ্দিন মাত্র ৬০ হাজার টাকায় প্রায় ১০০ গাছ কিনে নেন। গতকাল কলেজ চত্বরে গাছ কেটে নেওয়ার সময় মো. নাজিমউদ্দিন বলেন, 'আমি খোলাডাকে ৬০ হাজার টাকায় গাছগুলো কিনে নিয়েছি।'
স্থানীয় লোকজনের অভিমত, গাছগুলোর দাম পাঁচ-ছয় লাখ টাকার বেশি হবে।
কলেজ পরিচালনা কমিটির সদস্য মুক্তিযোদ্ধা শহীদুল ইসলাম বলেন, 'এভাবে গাছ কাটার ফলে কলেজ চত্বর বিরাণভূমি হয়ে গেল। রাষ্ট্রপতি আসবেন, তাই এত বড় একটা ক্ষতি মেনে নিতে হচ্ছে আমাদের। খুব খারাপ লাগছে। এ ছাড়া কোনো উপায়ও ছিল না।' তিনি বলেন, গাছ কাটায় কেবল সৌন্দর্য নষ্ট হচ্ছে তা নয়, কলেজে এখন ভুতুড়ে পরিবেশ বিরাজ করবে।
কুলিয়ারচর ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ মো. ইদ্রিস মিয়া বলেন, এসএসএফ কর্মকর্তার নির্দেশে কলেজ চত্বরের প্রায় ১০০ ছোট-বড় গাছ কেটে ফেলতে বাধ্য হয়েছেন তাঁরা। গাছগুলো খোলাডাকে ৬০ হাজার টাকায় বিক্রির কথা জানিয়ে তিনি বলেন, 'এসএসএফ কর্মকর্তা বলেছেন, গাছ না কাটলে রাষ্ট্রপতির সফরসূচি বাতিল করা হবে। তাই রাষ্ট্রপতির সম্মানে আমরা গাছ কাটতে বাধ্য হয়েছি।' তিনি বলেন, 'সরকার যখন পরিবেশ রক্ষায় গাছ লাগানোর তাগিদ দিচ্ছে, তখন আমরা গাছ কেটে কলেজটাকে মরুভূমি বানিয়ে ফেললাম।'
উপজেলার বিভিন্ন স্তরের মানুষ নির্বিচারে গাছ কাটার ঘটনায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানায়। কলেজের এক শিক্ষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, 'গাছ নয়, মনে হচ্ছে ওরা যেন আমাদের বুক ফালি করছে।' সাবেক এক ছাত্র বলেন, 'কলেজের দিকে তাকিয়ে কষ্টে বুকটা ফেটে যাচ্ছে।' অনেকে আবার বলেছেন, হেলিকপ্টার অবতরণের জন্য উপজেলার কোনো বড় মাঠ বেছে নিলে এত গাছ সাবাড় করতে হতো না। কুলিয়ারচর উপজেলার চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি আলহাজ মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর কালের কণ্ঠকে বলেন, রাষ্ট্রপতির হেলিকপ্টার অবতরণের জন্য দাড়িয়াকান্দি মাঠ ব্যবহার করলে এত গাছ কাটতে হতো না।
কুলিয়ারচরের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মোকাম্মেল হক গতকাল এ প্রসঙ্গে বলেন, 'গাছের চেয়ে মানুষের জীবনের মূল্য অনেক বেশি। হেলিকপ্টার নিরাপদে অবতরণের জন্য এসএসএফ কর্মকর্তাদের নির্দেশে গাছ কাটা হয়েছে।' তাঁর পক্ষ থেকে গাছ কাটার নির্দেশ দেওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, 'আমি নির্দেশ দেইনি। কলেজ কর্তৃপক্ষকে কেবল এসএসএফের বার্তা পৌঁছে দিয়েছি।'
এভাবে নির্বিচারে গাছ নিধন পরিবেশ ও বন আইনের লঙ্ঘন কি না_এ প্রশ্নের জবাবে ইউএনও প্রথমে 'আমি এ ব্যাপারে জানি না' বললেও পরে গাছ কাটা 'পরিবেশসম্মত নয়' বলে স্বীকার করেন।
রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব নেসার উদ্দিন ভূঁইয়ার কাছে এ ব্যাপারে জানতে চাওয়া হলে কালের কণ্ঠকে তিনি বলেন, 'আমরা তো গাছ কাটার ব্যাপারে কিছুই জানি না।'
এ ব্যাপারে বক্তব্য জানার জন্য এসএসএফের গ্রুপ ক্যাপ্টেন মোস্তাফিজুর রহমানের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। তবে বিমানবাহিনীর এক কর্মকর্তা কালের কণ্ঠকে বলেন, রাষ্ট্রপতির হেলিকপ্টার প্রথমে বাজিতপুর এয়ারফিল্ডে অবতরণের কথা ছিল। পরে এসএসএফ গিয়ে নিরাপত্তার কথা ভেবে কুলিয়ারচর কলেজে অবতরণের সিদ্ধান্ত নেয়। তবে এসএসএফ কর্মকর্তা কোনো গাছ কাটার নির্দেশ দেননি। তিনি গাছের ডালপালা ছেঁটে দিতে বলেছিলেন।

সূত্রঃ এখানে

একজন মানুষের জীবন হচ্ছে~ক্ষুদ্র আনন্দের সঞ্চয়,একেকজন মানুষের আনন্দ একেক রকম...http://www.rongmohol.com/uploads/1805_adda_logo_4.gif

গনযোগাযোগ সচিবঃ ফাউন্ডেশন ফর ওপেন সোর্স সলিউশনস বাংলাদেশ, নীতি নির্ধারকঃ মুক্ত প্রযুক্তি।


Re: রাষ্ট্রপতির হেলিকপ্টার নামবে, তাই বৃক্ষ নিধনযজ্ঞ!

worried    worried   একদিন রাষ্ট্রপতি আসবে এ জন্য দিনের পর দিন কষ্ট করে বড় হওয়া গাছ এক ঘন্টায় শেষ। ক্যাপ্টেন রে পাইলে,  feeling beat up   feeling beat up   ক্যাপ্টেন এর শাস্তি হইল, যতগুলো কাটছে তার ডবল লাগিয়ে প্রতিদিন পানি দিবে সন্ধাবেলা যতদিন না গাছগুলো আগের মত বড় হয়। পাইছে কী?  chatterbox

Shout Me Crunch আমার ব্যক্তিগত টেক ওয়েবসাইট।


Re: রাষ্ট্রপতির হেলিকপ্টার নামবে, তাই বৃক্ষ নিধনযজ্ঞ!

যার বিয়া তার কোন খবর নাই, পাড়াপড়শির ঘুম নাই।
শালারা ছাগলের দল।