Topic: একটি গল্পের সমালোচনা ও আমাদের করনীয় -মামুনুর রাশীদ

Tolstoy তার বিখ্যাত গল্প What men live by তে প্রেম ও মানবতা বোধের অমর চিত্র নির্মান করে গেছেন।যে গল্পে আমরা পাই জীবণ দর্শন ও মানবতা বোধের অমর বাণী।এ গল্পের সারাংশে আমরা খুঁজে পাই Love is God.অর্থাত প্রেমই ঈশ্বর।বর্তমান পৃথিবীতে মানুষের প্রতি মানুষের নির্দয় আচরনের এ ক্রান্তি লগ্নে যে কোন ভাবুক মানুষকেই এ গল্পটি ভাবিয়ে তোলে.ভোঁতা অনুভুতিতে আঘাত করে ও বিবেকের মাঝে মানবতা বোধকে জাগ্রত করে।এ গল্পে আমরা দেখতে পাই স্বর্গীয় দূত মিখাইল তিনটি ঐশ্বরিক সত্ত্য জানার জন্য পৃথিবীর বুকে প্রেরিত হয়। স্বর্গীয় দূতের শাস্তি স্বরূপ ঈশ্বর কর্তৃক পৃথিবীতে প্রেরিত হয় তিনটি Divine truth জানার জন্য। স্বর্গীয় দূত মিখাইল কেন ঈশ্বর কর্তৃক শাস্তি পেতে হয়েছিল আমরা সে দিকে যাবনা কিন্তু মিখাইল কর্তৃক তিনটি ঐশ্বরিক সত্ত্য জানার মধ্য দিয়ে আমাদের ও কিছু শিক্ষনীয় আছে কিনা তা আলোচনা করবো।প্রথমে তিনটি ঐশ্বরিক সর্ম্পকে আলোচনা করবো। তিনটি ঐশ্বরিক সত্ত্য প্রথমটি ছিল;What men have?(মানুষের কি আছে)। স্বর্গীয় দূত এর উত্তর পেয়েছিল;Men have love for others (মানুষের অন্যের জন্য প্রেম আছে)।The first truth was reveled to Mikhail when Matrona wife Simon took pity on him and gave him food. স্বর্গীয় দূত যখন মানব আকৃতি নিয়ে গির্জার গায়ে হেলান দিয়ে মাটিতে বিপযর্স্ত হয়েছিলেন তখন মুচি সাইন দয়াপরবশ হয়ে তাকে বাড়ীতে নিয়ে আসে এবং সাইমনের স্ত্রী মাত্রোনা স্বামীর সাথে নতুন আগুন্তুককে দেখে প্রথমে ক্রুদ্দ হয় পরে আবার এই মাত্রোনাই ঐশ্বরের কথা স্মরণ হওয়ায় মানবরুপী স্বর্গীয় দূতকে খাদ্য পরিবেশন করেন আর তখনই স্বর্গীয় দূত প্রথম ঐশ্বরিক সত্ত্যের উত্তর পেয়ে যান,Men love for others.
                               দ্বিতীয় ঐশ্বরিক সত্ত্যের পটভূমি ছিল;What men do not have?এর উত্তর সে এভাবে পেয়েছিল;When the fat rich man came to place order for a pair of boots. the second truth is that men do not have any knowledge of what many happen to them the moment or hour of the day.মোটা ধনী লোকটি এমন এক জোড়া বুট তৈরীর ফরমায়েশ দিলেন যা এক বছরের মধ্যে ছিড়বেনা,অতচ মৃত্যুদূত তার সন্নিকটেই তখন অবস্থান করছিল।ধনী লোকটি যদি জানতো যে কিছুক্ষণ পরেই তার মৃত্যু হবে তাহলে নিশ্চয় সে বুট তৈরীর ফরমায়েশ দিতেন না।মানুষ তার সম্মুখ জ্ঞানের অভাব হেতুই যা ইচ্ছে তা করে বসে,না হয় সে ভেবে চিন্তেই কাজ করত।তাইত স্বর্গীয় দূত দ্বিতীয় ঐশ্বরিক সত্তের সমাধান পেয়ে যান;Men do not have any knowledge of what may happen to them the next moment.
        তারপর স্বর্গীয় দূত what men live by (মানুষ কি নিয়ে বাঁচে)?তৃতীয় প্রশ্নের উত্তর ও পেয়ে যান;When the women come with the two girls to place orders for the shoes of the twins. The third truth is that men live by the force of love with in them. men live not for their own sake. but for others.মুচি সাইমন ও মিখাইল জুতা বানানো অবস্থায় দুটি ফুট ফুটে মেয়ে সহ যে স্ত্রীলোকটি তাদের কাছে মেয়ে দুটির জুতো তৈরী কর দেয়ার জন্য এসেছিল তাদের মধ্যে একটি মেয়ের পাঁ ছিল খোঁড়া।কথা প্রসঙ্গে স্বর্গীয় দূত মিখাইল জানতে পারে মেয়ে দুটি স্ত্রীলোকটির আপন মেয়ে নয়।মেয়ে দুটি ছিল স্ত্রীলোকটির প্রতিবেশী এক মহিলার মেয়ে যিনি মেয়ে দুটিকে প্রসব করার সময় মারা যান এবং ওই সময় একটি মেয়ের উপর গড়িয়ে পড়ার কারনেই আজ একটি মেয়ের পাঁ খোড়া।ঘটনা ক্রমে এ স্ত্রীলোকটিরও সন্তান মারা যায় তাই মা মরা মেয়ে দুটির জন্য স্ত্রীলোকটির মমতা লেগে যায় এবং সে থেকেই মাতা পিতাহীন মেয়ে দুটিকে স্ত্রীলোকটি নিজ মেয়ের মতই লালন পালন করে বড় করে এবং আজ মেয়ে দুটি ছাড়া স্ত্রীলোকটির জীবণ মুল্যহীন।
           এ জানার মধ্য দিয়েই স্বর্গীয় দূত তার তৃতীয় ঐশ্বরিক সত্তের উত্তর পেয়ে যান;Men live by the force of love with in then. Men live not for their own sake. but for others (মানুষ নিজের জন্য বাচেঁনা,বাচেঁ পরের জন্য)।তিনটি ঐশ্বরিক সত্ত জানার পর ঈশ্বর কর্তৃক স্বর্গীয় দূতের পাপ মুক্ত হয়ে সে পূর্ণবার স্বর্গে ফিরে যায়।
                এখন দেখা যাক স্বর্গীয় দূতের সাথে সাথে এ তিনটি ঐশ্বরিক সত্ত জানার মধ্য দিয়ে আমাদেরও করনীয় কিছু আছে কিনা।প্রথম সত্ত জেনেছি মানুষের অন্যের জন্য প্রেম আছে।দ্বিতীয় সত্ত মানুষের পর মুহুর্তে যে কি ঘটবে সে জ্ঞান তার নেই।তৃতীয় সত্ত মানুষ পরের জন্য বাঁচে।হ্যাঁ মানুষের অন্যের জন্য প্রেম আছে বলেই আমরা দেখতে পাই পৃথিবীতে এমন অনেক মানুষ আছে যারা পরের জন্য নিজকে বিলিয়ে দেয়।পরের সাহায্য সহযোগীতায় হাত বাড়িয়ে দেয়।গল্পের মধ্যমে এসত্য জানার পর আমাদের পরস্পরের মধ্যে এ দায়িত্ব বোধ আরো বেড়ে যায় এবং এ সত্তের প্রতি খেয়াল রেখে সমাজে বিচরন করা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব হয়ে দাড়াঁয়।দ্বিতীয় সত্ত জানার পর মানুষের চিন্তাশীল হওয়া উচিত।যার পর মুহুর্ত্যের জীবনের জ্ঞান নেই তাকে সৃষ্টি জগতের সকল অনিষ্ট থেকে ফিরে থাকাই উচিত এবং মানব কল্যানের মধ্য দিয়ে জীবনকে সার্থক করাই উচিত।তৃতীয় সত্ত মধ্য দিয়ে মানবতার এক মহান বাণী আমাদের মাঝে পরিস্ফুটিত হয়ে উঠে।সত্তিই মানুষ নিজের জন্য বাঁচা উচিত নয়।মানুষের শ্রেষ্ঠত্ব দাবী করে মানুষকে শুধু নিজের জন্য বেচেঁ থাকা শোভনীয়ই নয়।যে এমন করে তার শ্রেষ্ঠত্বের দাবী চলেনা।মানুষের মধ্যে যদি মানবতাই না থাকলো,সৃষ্টিজগতের জন্য ভালোবাসাই না থকলো তা হলে সে পরিপূর্ণ মানুষ হিসেবে দাবী করতে পারেনা।মানুষ কে মানুষ ও মানবতার জন্যই বেচেঁ থাকতে হবে।আর যদি মানুষ এ একটি গুনই নিজের মধ্যে প্রতিফলিত করতে পারে তাহলে তার পক্ষে খারাপ ও নিষ্ঠুর কাজ কখনো সম্ভব নয়।এমন মানুষের জন্যই পৃথিবী হয়ে উঠে সুন্দর ও মধুময়।বর্তমান সংঘাত পূর্ণ বিশ্বে প্রত্যেক মানুষকেই মানবতা,দয়া ও মায়ায় পরিপূর্ণ হওয়া প্রয়োজন।তাকে বুঝতে হবে শুধু নিজের জন্য নয়,পরের জন্যও বাচঁতে হবে।তাহলেই পৃথিবী হয়ে উঠবে সুন্দর,মধুময় ও সবার জন্য বাসযোগ্য।আর যিনি উপরের বিধাতা তিনিও চান;Men help each other and love each other.এ গল্পে মানব প্রেমের কথাই উজ্জ্বল হয়ে ফুটে উঠেছে।আমাদের শিক্ষনীয় বিষয় নির্দেশ করেছে প্রেম ও মানবতার অমর শিক্ষা,কারন;Love is god.প্রেমই ঈশ্বর।
ব্যত্তিগতঃপবিত্র ঈদুল আযহা একবারেই আমাদের দোরগোড়ায়।ধনী দরিদ্র সবাই আমরা এ দিনে এক সাথে ঈদ ও ঈদের খুশী করবো।এখন এখানে একটি বড় বিষয় হচ্ছে আমরা যারা অর্থবান তারাই শুধু কোরবান দিব কিন্তু আমাদেরই প্রতিবেশী অসহায় গরীব লোকটি হয়ত কোরবানী দিতে পারছেনা এক্ষেত্রে আমাদের অবশ্য অবশ্যই মানবতা বোধের দায়িত্ব থেকে হলেও তাদের দিকে খেয়াল রাখতে হবে।বেশী না হয় অন্তত এক টুকরা গোস্ত হলেও আমরা তাদের দিব।মনে রাখতে হবে গলা থেকে একটু নিচে নেমে গেলেই সকল খাদ্যের স্বাদ কিন্তু এক হয়ে যায়।তাহলে আমরা কৃপনতা করবো কেনো।সবাই মিলে সমভাবে ঈদ করলেই না তবে ঈদের খুশী।তাইনা?বন্ধুরা,আমরা যেন দরিদ্রদের ভুলে না যাই,এ আহবান রইলো। 
                                                                        মামুনুর রশীদ (কবি,গল্পকার ও ছড়াকার)
                                                                        হাজীবাড়ী,নাওতলা চৌরাস্তা,সোনাইমুড়ী,নোয়াখালী।
                                                                          Email:[email protected]
                                                                                       26/10/2012

Gp