(edited by Julhaz 2012-07-16 20:30:51)

Topic: চাঁদ দেখাকে সম্পূর্ণ উপেক্ষা করে সউদী আরবে আগাম রমাদ্বান মাস ঘোষণা

হাদীছ শরীফ-এ রয়েছে, আল্লাহ পাক উনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ করেন, “হযরত আবু হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ করেন, তোমরা রোযা রাখ চাঁদ দেখে, ইফতারী কর চাঁদ দেখে। যদি ২৯ তারিখে আকাশ মেঘলা হয়, চাঁদ দেখা না যায় তাহলে ৩০ তারিখ গণনা করে ঈদ করবে। (বুখারী শরীফ, মুসলিম শরীফ, মিশকাত শরীফ)

হাদীছ শরীফ-এ ইরশাদ হয়েছে-“হযরত আবু হুরাইরা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ করেন, তোমরা রোযা রাখ চাঁদ দেখে এবং রোযা ভাঙ্গ চাঁদ দেখে। যদি মেঘের কারণে তোমাদের প্রতি চাঁদ গোপন থাকে তবে শা’বান মাস ত্রিশ দিন পূর্ণ করবে।” (বুখারী শরীফ, মুসলিম শরীফ, মিশকাত শরীফ ১৭৪)

অর্থাৎ ২৯ শে শা’বান যদি কোন কারণবশতঃ চাঁদ দেখা না যায় তবে শা’বান মাসকে ৩০ দিন পূর্ণ করে অতঃপর রমাদ্বান শরীফ এর রোযা রাখবে।
আবার ২৯ শে রমদ্বান শরীফ যদি চাঁদ দেখা না যায় তাহলে রমাদ্বান শরীফ এর রোযা ৩০টি পূর্ণ করে ১লা শাওওয়াল ঈদুল ফিতর উদযাপন করতে হবে।
আরো ইরশাদ হয়েছে, “হযরত আবু হুরাইরা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ করেন, তোমরা রমাদ্বান শরীফ এর রোযা পালনের জন্য সঠিকভাবে শা’বানের চাঁদের হিসাব রাখবে।” (তিরমিযী শরীফ, মিশকাত শরীফ ১৭৪)

চাঁদ দেখে মাস নির্ধারণ করতে হবে। চাঁদ দেখার মাসয়ালা হচ্ছে, শা’বান, রমাদ্বান শরীফ, শাওওয়াল এবং যিলহজ্জ এ চার মাসে চাঁদ তালাশ করা হচ্ছে ওয়াজিবে কিফায়াহ। কারো কারো মতে, ফরযে কিফায়াহ। কিছু লোককে চাঁদ তালাশ করতেই হবে।

এখন রমাদ্বান শরীফ, শাওওয়াল এবং যিলহজ্জ এ তিনমাস ব্যতীত যে নয় মাস রয়েছে এ নয় মাসের চাঁদের হুকুম হচ্ছে, আকাশ পরিষ্কার থাকুক অথবা মেঘলা থাকুক এই নয় মাসের চাঁদ দেখার জন্য দু’জন পুরুষ স্বাক্ষী দিবে অথবা একজন পুরুষ দু’জন মহিলা স্বাক্ষী দিবে তাহলে রমাদ্বান শরীফ, শাওওয়াল, জিলহজ্জ এই তিনমাস ব্যতিত অন্য মাসের চাঁদগুলোকে গ্রহণ করা হবে।

শাওওয়াল এবং যিলহজ্জ এ দু’মাসের চাঁদ দেখার হুকুম হচ্ছে আকাশ মেঘলা থাকলে কমপক্ষে দু’জন পুরুষ অথবা এক জন পুরুষ দু’জন মহিলা চাঁদ দেখতে হবে।
আর যদি আকাশ পরিষ্কার থাকে তাহলে শাওওয়াল এবং যিলহজ্জ অর্থাৎ রোজার ঈদ এবং কুরবানীর ঈদের চাঁদ এত সংখ্যক লোক দেখতে হবে, যেটা মিথ্যা বলা সম্ভব নয়।

আকাশ পরিষ্কার থাকলে রমাদ্বান শরীফ এর চাঁদ দেখার জন্য এতসংখ্যক লোকের দেখার প্রয়োজন রয়েছে, যেটা মিথ্যা বলা সম্ভব নয়।
আর রমাদ্বান শরীফ এর চাঁদ অর্থাৎ ২৯শে শা’বান যদি আকাশ মেঘলা থাকে তাহলে রমাদ্বান শরীফ এর জন্য ১জন পুরুষ অথবা ১জন মহিলা চাঁদ দেখলেই সেটা রমাদ্বান শরীফ এর চাঁদ হিসেবে গণ্য হবে।

হাদীছ শরীফ-এ রয়েছে, “হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বর্ণনা করেন, লোকজন চাঁদ দেখলে আমিও দেখলাম, আমি দেখে এসে বললাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ ইয়া হাবীবাল্লাহ ছলাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমি চাঁদ দেখেছি। যখন আমি স্বাক্ষী দিলাম, তখন নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আমার সাক্ষী গ্রহণ করে নিজেও রোযা রাখলেন মানুষকেও রোযা রাখতে বললেন।”  (আবূ দাঊদ শরীফ, দারিমী শরীফ, মিশকাত শরীফ)

মোটকথা, রমাদ্বান শরীফ-এর চাঁদ দেখার জন্য আকাশ যদি মেঘলা তাকে তাহলে ১জন পুরুষ বা একজন মহিলা দেখলেই সেটা যথেষ্ট কিন্তু আকাশ পরিষ্কার থাকলে এত সংখ্যক পুরুষ বা মহিলা চাঁদ দেখতে হবে যেটা মিথ্যা বলা সম্ভব নয়।

এখন চাঁদ দেখার জন্য কোশেশ বা চেষ্টা করতে হবে। এতে কোন ত্রুটি করা যাবে না। কেননা চাঁদ তালাশ করা হচ্ছে ওয়াজিবে কিফায়াহ।
তবে বিশেষ করে মুসলমান দেশগুলোতে যদি হিলাল কমিটি থাকে তাহলে হিলাল কমিটি দেখলেই সমস্ত লোকের ওয়াজিবে কিফায়া আদায় হয়ে যাবে। তারপরেও জনগণের জন্য সেটা তালাশ করার হুকুম রয়েছে। যেহেতু শা’বান, রমাদ্বান শরীফ, শাওওয়াল, যিলহজ্জসহ প্রতিটি মাস মুসলমানদের ইবাদত বান্দেগীর সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই চাঁদ তালাশ করা ফরযে কিফায়া, ওয়াজিব কিফায়াহ ফতওয়া দেয়া হয়েছে। এখন অবশ্যই কিছু লোককে চাঁদ তালাশ করতেই হবে। যদি কেউ তালাশ না করে তাহলে সকলেই ফরয এবং ওয়াজিব তরকের গুনায় গুনাহগার হবে।
বর্তমান যুগ বিজ্ঞানের যুগ তাই চাঁদ দেখার জন্য মুসলিম বিজ্ঞানীগণ কতগুলো শর্ত বের করেছেন সে শর্তগুলো পূর্ণ হলে আরবী মাসের ২৯তম দিনে চাঁদ দেখতে পাওয়ার সম্ভবনা থাকে। অর্থাৎ অগ্রীম বুঝা যায় যে, চাঁদ দেখা যাবে কিংবা যাবে না। কিন্তু তারপরও চাক্ষুষ চাঁদ দেখা শরীয়তের শর্ত।

মুসলিম বিজ্ঞানীগণ কতগুলো শর্ত বের করেছেন সে শর্তগুলো হলো-
১)    চাঁদের বয়স    : সাধারণভাবে চাঁদ দেখতে পাওয়ার সর্বনিম্ন বয়স ১৭ ঘণ্টা এবং সর্বোচ্চ ২৪ ঘণ্টা।
২)    চন্দ্র, সূর্যের কৌণিক দূরত্ব : বর্তমানে বায়ুমণ্ডলের দূষণ, আলোর দূষণ এবং ধূলাবালির কারণে চাঁদ সূর্য থেকে ১০-১০.৫ ডিগ্রী পর্যন্ত সরে আসলে তারপর চাঁদ দৃশ্যমান হয়। এই পরিমাণ কোণ তৈরী করতে চাঁদের লাগে প্রায় ১৭ থেকে ২৩ ঘণ্টা।
৩)    দিগন্তরেখার উপর চাঁদের উচ্চতা :
সাধারণত যে চাঁদ সূর্যাস্তের সময় দৃশ্যমান হবে সাধারণতঃ সে চাঁদকে ১০ ডিগ্রী উচ্চতায় বা তার চেয়েও অধিক উচ্চতায় অবস্থান করতে হয়।
৪)    সূর্যাস্তের লাল আভা বিকিরণের বিস্তৃতি ও স্থায়ীত্ব : দিগন্তের উজ্জলতার চেয়ে চাঁদের উজ্জলতা কম থাকলে খালি চোখে চাঁদ দৃশ্যমান হয় না।
৫)    হিলালের তীর্যক পথ ও খাড়া পথে গমণ :
অনেক সময় চাঁদের ৪০ ঘণ্টা বয়স না হলে দেখা যায় না এর কারণ হচ্ছে, হিলালের পথ পশ্চিমাকাশে তীর্যকভাবে থাকে, খাড়াভাবে থাকে না। হেলানো বা তীর্যকপথে হিলালের অস্ত যেতে সময় লাগে অনেক কিন্তু সূর্যের মধ্যে ডুবে থাকার কারণে দেখা যায় না।
৬)    হিলালের আলোকিত অংশ বা চাঁদের পুরুত্ব : যে চাঁদ তার জন্মের সময় সম্পূর্ণ অন্ধকার থাকে না তাকে দেখার সম্ভাবনা, যে চাঁদ অমাবস্যার সময় সম্পূর্ণ অন্ধকার থাকে তার চেয়ে দেখার সম্ভাবনা বেশি থাকে। যদিও চাঁদের বয়স সমান থাকে। এ কারণেই বিজ্ঞানীরা চাঁদের প্রশস্থতাকে চাঁদ দেখার একটি শর্ত হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
৭)    পৃথিবী থেকে চাঁদের দূরত্ব এবং সূর্য থেকে পৃথিবীর দূরত্ব : পৃথিবীর চতুর্দিকে চাঁদের কক্ষপথ কখনই পরিপূর্ণ গোল নয় বরং উপবৃত্তাকার। সে কারণে চাঁদ পৃথিবীর কাছে থাকে এবং কখনও দূরে অবস্থান করে। আবার সূর্যের চতুর্দিকে পৃথিবীর কক্ষপথও পুরোপুরি গোলাকার নয় বরং উপবৃত্তাকার। সুতরাং পৃথিবী কখনও সূর্যের কাছে থাকে এবং কখনও দূরে।
তাই চাঁদ ও পৃথিবীর সূর্যের কাছাকাছি অবস্থান এবং কখনও দূরে অবস্থানের বিষয়টি চাঁদ কখন, কোথায় প্রথম দৃশ্যমান হবে তার সাথে জড়িত।
৮)    রাস্তাঘাট ও বাড়ীঘরের আলো : রাস্তাঘাটের অতিরিক্ত আলো যে অস্বচ্ছ পরিবেশ সৃষ্টি করে তা চাঁদ দেখতে পাবার জন্যে যথেষ্ট বাধার কারণ। অনেক সময় আকাশ পরিস্কার থাকলেও রাস্তাঘাটের উজ্জ্বল আলো চাঁদের ম্লান আলোকে বাধাগ্রস্ত করে।
৯)    বায়ুস্তরে ভাসমান পদার্থের পরিমান : ‌বাতাসে ভাসমান ধুলিকণা হিলালের আলো বিক্ষিপ্তভাবে প্রতিফলিত করে থাকে। এই বিক্ষিপ্ত আলো আমাদের চোখে পৌঁছেনা। যে অঞ্চলে বাতাসে ধুলিকণার পরিমাণ খুব বেশী সেখানে অন্যান্য অঞ্চলের তুলনায় হিলাল দেখার সম্ভাবনা কম হবে।
১০)    চাঁদ ও সূর্যের অস্ত যাওয়ার সময়ের পার্থক্য : চাঁদ ও সূর্যের অস্ত যাওয়ার সময়ের পার্থক্য যদি ৪২ মিনিট হয় তবে প্রথম ১০ মিনিটে চাঁদ দৃশ্যমান হবে না। সূর্য অস্ত যাওয়ার ২০-৩০ মিনিট পর চাঁদ দৃশ্যমান হবে।
১১)    আজীমাত :
চাঁদ প্রতি মাসে একই স্থানে দেখা যায় না। পশ্চিমে ডান ও বামে সরে সরে আসে।
১২)    গোধুলী : সূর্যাস্তের সঙ্গে সঙ্গেই আকাশ অন্ধকার হয় না। দৃশ্যতঃ সূর্যাস্তের পরও বায়ুমন্ডলের উপরিভাগ সূর্যের রশ্মিকে কিছুক্ষণ ধরে রাখতে সক্ষম হয় এবং আকাশ আলোকিত করে।

উপরোক্ত শর্তসমূহের সংক্ষিপ্ত আলোচনা হতে দেখা যায় যে, চাঁদের বয়স ১৭-২৩ ঘন্টা হলেও অন্যান্য শর্তসমূহ পূর্ণ না হলে চাঁদ দেখা যাওয়ার সম্ভবনা কম থাকে।

অথচ সউদী আরবের তথাকথিত আলিম আব্দুল্লাহ আলমানী চাঁদ দেখাকে সম্পূর্ণ উপেক্ষা করে আগাম ঘোষণা দিয়েছে যে, ২২শে ছানী ১৩৮০ শামসী সন (অর্থাৎ ২০শে জুলাই ২০১২ ঈসায়ী সন) ইয়াওমুল জুমুয়াতি বা শুক্রবার হবে সউদী আরবে পহেলা রমাদ্বান শরীফ। নাউযুবিল্লাহ!

২১শে ছানী ১৩৮০ শামসী সন (১৯শে জুলাই ২০১২ ঈসায়ী সন) ইয়াওমুল খামীসি বা বৃহস্পতিবার সউদী আরবে অমাবস্যার দিন।

সেদিন অমাবস্যা সংঘটিত হবে : সউদী আরবের সময় অনুযায়ী সকাল ৭টা ২৪ মিনিটে

সেদিন সূর্যাস্ত হবে : সউদী আরবের সময় অনুযায়ী সন্ধ্যা ৭টা ৭ মিনিটে

অর্থাৎ সূর্যাস্তের সময় চাঁদের বয়স হবে : ১১ ঘন্টা ৪৩ মিনিট

আর চন্দ্রাস্ত হবে : সউদী আরবের সময় অনুযায়ী সন্ধ্যা ৭টা ১৩ মিনিটে

অর্থাৎ চাঁদ ও সূর্যের অস্ত যাওয়ার সময়ের পার্থক্য : মাত্র ৬ মিনিট

এছাড়া চাঁদের উচ্চতা থাকবে দিগন্তরেখা বরাবর (০ ডিগ্রি)

এমতাবস্থায় ২১শে ছানী ১৩৮০ শামসী সন (১৯শে জুলাই ২০১২ ঈসায়ী সন) ইয়াওমুল খামীসি বা বৃহস্পতিবার সউদী আরবে চাঁদ দৃশ্যমান হওয়ার কোনোই সম্ভাবনা নেই।

আর বলার অপেক্ষাই রাখে না যে, শরীয়তে চাঁদ দেখা ছাড়া কোনভাবেই অগ্রীম কোন আরবী মাস শুরু করা সম্পূর্ণ অবৈধ। কেননা হাদীছ শরীফ-এ স্পষ্ট ইরশাদ হয়েছে-“হযরত আবু হুরাইরা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ করেন, তোমরা রোযা রাখ চাঁদ দেখে এবং রোযা ভাঙ্গ চাঁদ দেখে। যদি মেঘের কারণে তোমাদের প্রতি চাঁদ গোপন থাকে তবে শা’বান মাস ত্রিশ দিন পূর্ণ করবে।” (বুখারী শরীফ, মুসলিম শরীফ, মিশকাত শরীফ ১৭৪)


এমতাবস্থায় সারাবিশ্বের মুসলমানগণের জন্য ফরয-ওয়াজিব হচ্ছে, সউদী ওহাবী সরকারের এরূপ শরীয়তবিরোধী ও মনগড়া কর্মকাণ্ডের তীব্র প্রতিবাদ করা।



(edited by Julhaz 2012-07-17 21:38:13)

Re: চাঁদ দেখাকে সম্পূর্ণ উপেক্ষা করে সউদী আরবে আগাম রমাদ্বান মাস ঘোষণা

http://www.okaz.com.sa/new/Issues/20120 … 518064.htm

طالبوا بعدم قبول إفادات الشهود غير الموثقة .. فلكيون عرب لـ «عكاظ»:

رؤية الهلال ليلة الجمعة بالعين المجردة مستحيلة في الرياض والقاهرة