Topic: বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়াম :এমন জঘন্য মাঠেই আর্জেন্টিনা-নাইজেরিয়া ম্যাচ?
আগামী ৬ সেপ্টেম্বর ঢাকার বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হবে বিশ্ববিখ্যাত ফুটবল দল আর্জেন্টিনা-নাইজেরিয়ার প্রীতি ম্যাচ। এ ম্যাচকে ঘিরে সারাদেশের ফুটবল অনুরাগীদের উত্সাহের সীমা-পরিসীমা নেই। বাফুফে এরই মধ্যে এ ম্যাচের প্রচার-প্রচারণা ও টিকেট বিক্রির কার্যক্রম শুরু করে দিয়েছে। গতকালও এ ম্যাচকে ঘিরে বাফুফে ও আপন কমিউনিকেশনের মধ্যে এক চুক্তি স্বাক্ষর হয়। উদ্দেশ্য আর্জেন্টিনা-নাইজেরিয়া ম্যাচের প্রচার-প্রচারণা। এ ম্যাচ অনুষ্ঠিত হওয়ার এক মাসেরও কম সময় বাকি। অথচ মাঠ প্রস্তুতির কার্যক্রম এখনও শুরু করেনি বাফুফে।
দু’দিন আগে সুপার কাপে আবাহনী-মোহামেডান এমন জঘন্য মাঠেই ফাইনাল খেলেছিল। কোটি টাকার ফুটবল ম্যাচের আগেও বাফুফে যথাযথ মাঠের পরিচর্যা করেনি। তাই আবাহনী-মোহামেডানের ফুটবলাররা জল-কাদায় মাখামাখি হওয়া মাঠে যে ফুটবল খেলেছে, তা যেন ‘জাম্বুরা’ ফুটবল। রীতিমতো চষা খেতেই যেন তারা ফুটবল খেলেছিল। কাদায় মাখামাখি হতে হতে শেষ পর্যন্ত বেশিরভাগ ফুটবলারের জার্সি নাম্বার খুঁজে পাওয়া যায়নি। ফলে বেতার-টিভির ধারা ভাষ্যকাররাও ফুটবলারদের জার্সি-নাম্বার চিনতে না পেরে বারবার ভুল তথ্য দিয়েছেন।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে, ৬ সেপ্টেম্বর আর্জেন্টিনা-নাইজেরিয়া ম্যাচের আগেও যদি বাফুফে দায়সারাভাবে মাঠ পরিচর্যা করে এবং বৃষ্টির ওপর দায় চাপানোর অপচেষ্টা করে, তাহলে বাংলাদেশের মাটিতে সবচেয়ে আকর্ষণীয় ও বড় ম্যাচের আয়োজনটা একেবারেই নিরর্থক হবে।
ঢাকায় ৬ সেপ্টেম্বর যখন আর্জেন্টিনা-নাইজেরিয়া ম্যাচ হবে বাংলা পঞ্জিকার হিসেবে তখন ভাদ্র মাসের মাঝামাঝি থাকবে। মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে এ সময় সারাদেশে বৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কা প্রবল এবং স্বাভাবিক।
তাই বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামের মাঠে বৃষ্টির পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না করলে, আর্জেন্টিনা-নাইজেরিয়াকে এমন জঘন্য মাঠেই খেলতে হবে। এতে দেশের ভাবমূর্তি দারুণভাবে ব্যাহত হবে। ফজলুর রহমান বাবুলের নেতৃত্বে বাফুফের যে মাঠ পরিচর্যা কমিটি আছে, তাদের দ্বারা যে কোনো কাজ হবে না ৬ আগস্ট বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়াম সুপার কাপে আবাহনী-মোহামেডান ম্যাচে মাঠের জঘন্য দশাই তার প্রমাণ। পেশাদার লীগ শেষে সুপার কাপের প্রথম পর্ব হওয়ার পর ১৪ দিন বিরতি ছিল। এ সময় মাত্র একদিন ২৮ জুলাই বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে লেবানন-বাংলাদেশ বিশ্বকাপ প্রাক-বাছাই ফিরতি পর্বের ম্যাচ হয়েছে। পরে দুটি সেমিফাইনাল আর ফাইনাল ম্যাচ আয়োজনেই এ মাঠের দফারফা। সুপার কাপ ফাইনালের আগের দিন ও ফাইনালের দিন মোটামুটি বৃষ্টি হলেও তার আগের এক সপ্তাহ ছিল প্রচণ্ড খরা। পুরো এক সপ্তাহ জুলাই মাসের গনগনে রোদে মাঠ শুকালেও মাত্র একদিনের টানা বৃষ্টিতে মাঠের যদি এমন হাল হয়, তাহলে বাফুফের গ্রাউন্ডস কমিটির কাজটা কী?
আবাহনী-মোহামেডান সুপার কাপের ফাইনালে খেলা আবাহনীর স্ট্রাইকার আলফাজ আহমেদ বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামের মাঠের জঘন্য দশা সম্পর্কে বলেন, ‘আমি পৃথিবীর অনেক দেশেই খেলেছি। বৃষ্টি হলেও সেসব দেশের মাঠে কোনো সমস্যা হয় না। জল নিষ্কাশনের চমত্কার ব্যবস্থা আছে। আমাদের মাঠ একটাই। এ মাঠে অনেক খেলা হয়। তাই মাঠের এ দশা। আর বাফুফের গ্রাউন্ডস কমিটি ঠিকমতো মাঠের পরিচর্যা করে না। পরিচর্যা করলে মাঠের এমন হতশ্রীদশা হতো না।’সুপার কাপে মাঠের হতশ্রীদশা নিয়ে ক্ষোভ ঝেড়েছেন আবাহনীর তিন ঘানাইয়ান ফুটবলার— সামাদ ইউসুফ, আইডু ইব্রাহিম ও থুয়াম ফ্রাঙ্ক। বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামের মাঠ প্রসঙ্গে মোহামেডানের কোচ শফিকুল ইসলাম মানিক বলেন, ‘এমন মাঠে আর্জেন্টিনা-নাইজেরিয়ার ম্যাচের আয়োজন করা হলে দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট হবে। সে সময় বৃষ্টি হওয়ার ভালো সম্ভাবনা আছে। বাইরের দেশেও এমন ব্যবস্থা আছে। বৃষ্টি হলেও মাঠের তেমন ক্ষতি হয় না। খুব শিগগির যদি ড্রেনেজ সিস্টেমের উন্নতি করা না যায় তাহলে অন্তত পুরো মাঠটা ক্রিকেটের কাভারের মতো ঢেকে দেয়া উচিত। তাহলে মানসম্মত মাঠেই আর্জেন্টিনা-নাইজেরিয়া ম্যাচটা হতে পারবে।
বাফুফের গ্রাউন্ডস কমিটির কাজ সন্তোষজনক নয়। তাদের আরও উন্নত প্রযুক্তিতে মাঠের পরিচর্যা করা উচিত। বাফুফের গ্রাউন্ডস কমিটির চেয়ারম্যান ফজলুর রহমান বাবুল দায়সারাভাবে উত্তর দেন, ‘বৃষ্টি হলে মাঠের সমস্যা হবেই। রোদ হলে মাঠের সমস্যা থাকে না। এ মাঠে প্রচুর খেলা হওয়াতে মাঠের এমন জঘন্য দশা হয়েছে।’
সুত্র
রোদ থাকলেও মাঠের যে মারথাবা অবস্থা(!),বৃষ্টি হলে তো প্রায় সাতার কাটার মত অবস্থা হয়ে যায়।
আসুন আমরা ফুটবল খেলা না দেখে বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে সাতার প্রতিযোগিতা দেখি।