Topic: দি সোর্স - কান উৎসবে মরোক্কান ছবি
কান চলচ্চিত্র উৎসবের চূড়ান্ত পর্বে সবগুলো ছবির প্রদর্শনী শেষে এখন জুরিদের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছে ছবির কলাকুশলীরা। তবে কান উৎসবের শেষ দিন মরক্কোর একটি ছবি বেশ সাড়া ফেলে দিয়েছে। রোমানিয়ার বংশোদ্ভূত ফরাসি পরিচালক রাদু মিহাইলিনুর এ ছবিটির নাম ‘দি সোর্স’, যা প্রদর্শিত হয়েছে দুদিন আগে।
কাহিনী সংক্ষেপ: তুরস্কের একটি সত্য ঘটনা অবলম্বনে তৈরি এ ছবির প্রেক্ষাপট গড়ে উঠেছে মরক্কোর একটি প্রত্যন্ত গ্রামের নারী লাইলা, যার স্বামী সামি সেখানকার স্কুলের শিক্ষক। কাছে ধারে কুয়ো না থাকায় গ্রামের অন্যসব নারীদের মতো তিনিও প্রতিদিন অনেকটা পথ হেঁটে পানি নিয়ে আসেন। অথচ গ্রামের সব শক্ত-সামর্থ পুরুষ দোকানে বসে আড্ডা দেয় আর চা খায়। কুসংস্কার আর গ্রাম্য মানসিকতার কারণে নারীদের কষ্ট তারা যেন টেরই পায় না। একদিন পানি আনতে গিয়ে গ্রামের এক সন্তানসম্ভবা নারী পিছলে পড়ে গেলে তার পেটের সন্তান নষ্ট হয়ে যায়। এ ঘটনার পর প্রতিবাদী হয়ে ওঠে লাইলা; কিন্তু স্থানীয় ইমাম এবং প্রভাবশালী ব্যক্তিরা গর্জে ওঠেন লাইলার সামনে। শেষ পর্যন্ত লাইলাসহ গ্রামের নারীরা সিদ্ধান্ত নেয়, যতদিন পর্যন্ত স্বামীরা তাদের দাবি মানবে না ততদিন পর্যন্ত যৌন সম্পর্ক থেকে তারা বিরত থাকবে। এরপরই টনক নড়ে গ্রামের পুরুষদের। ছবিতে দেখানো হয়েছে
স্কুল শিক্ষক স্বামীর কাছেই লিখতে-পড়তে শেখেন লাইলা। স্বামী যেমন তাকে আরব্য রজনীর কাহিনী পড়তে শেখান, তেমনি তার কাছ থেকেই কোরআন শরিফ পড়তে শেখেন লাইলা। স্থানীয় ইমামের সঙ্গে তর্কের সময় কোরআন শরিফ থেকেই সে যুক্তি তুলে ধরেন। ‘দি সোর্স’ ছবিটিতে তুলে ধরা হয়েছে কীভাবে ধর্মীয় গোড়ামী ও ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে নারীদের বঞ্চিত করে রাখা হয়েছে। ছবিটির ইহুদি পরিচালক মিহাইলিনু বলেন, কোরআন শরিফ এবং ইসলাম ধর্মে নারীদের অনেক অধিকার দেয়া হয়েছে; কিন্তু কিছু মানুষ কোরআন এবং হাদিসের ব্যাখ্যার সময় অনেক কিছু লুকিয়ে রাখার চেষ্টা করে, যাতে পুরুষদের হাতেই ক্ষমতাটা থেকে যায়। ছবিটিতে লাইলা চরিত্রে অভিনয় করেছেন আলজেরিয়া বংশোদ্ভূত ফরাসি অভিনেত্রী লাইলা বাখতি। তিনি বলেন, এ ছবিটিতে নারী-পুরুষকে মুখোমুখি দেখানো হয়নি। সমস্য হলো আমরা কখনো একে অপরের কথা শুনি না। এ ছবিতে সে কথাই বলা হয়েছে।