Topic: জ্বরে রোগী কী খাবে
জ্বরে কোন রোগের লক্ষণ প্রকাশ পায়। অর্থাৎ প্রাথমিক উপসর্গ হিসেবে জ্বরকে অভিহিত করা হয়। শরীরের তাপমাত্রা স্বাভাবিক তাপমাত্রার (৯৮হ্ন ৪হ্ন ফা বা ৩৭হ্ন সে) চেয়ে বেশি তাপ হলে তাকে জ্বর বা ফিভার বলে। অনেক সময় বিভিন্ন রোগের সংক্রমণ থেকেও জ্বর হতে পারে।
জ্বর অল্প ও দীর্ঘ সময়ের জন্য হতে পারে। অল্প সময়ের জ্বর সর্দি, টনসিল, ফ্লু, ব্যথা, প্রদাহ, হাম, নিউমোনিয়া, টাইফয়েড অথবা হাড় ভেঙে গেলেও হতে পারে। সেক্ষেত্রে জ্বর কতক্ষণ থাকছে বা কয়বার ওঠানামা করছে বা জ্বরের অন্য কোন উপসর্গ দেখা যাচ্ছে কি না, তা লক্ষ্য রাখতে হবে।
প্রতি ডিগ্রি জ্বরে বিপাকীয় হার প্রায় ৭ ভাগ বাড়ে। তাই জ্বরে শক্তি চাহিদা বেড়ে যায়, শরীরের অতিরিক্ত এ শক্তি পূরণের জন্য সঞ্চিত চর্বি ও পেশির ক্ষয় বেড়ে যায়। তাই তখন রোগী ক্ষীণ হয়ে পড়ে। অনেক সময় জ্বর হলে কিডনিতে সমস্যা দেখা দিতে পারে। আন্ত্রিক গোলযোগের কারণে ডায়রিয়া হয়। ফলে দেহ পানিশূন্য হয়ে পড়ে। রুচি কমে যায়, পেটে গ্যাস হয়, বমি বমি ভাব, শরীর ব্যথা, মাথা ব্যথা ইত্যাদি হয়ে থাকে।
দীর্ঘমেয়াদি জ্বর হলে দেহে প্রোটিন সংশে¬ষণ বাড়ে। তাই দেহের ওপর বাড়তি ক্ষতিকর প্রভাব পড়ে। তখন লিভার ও কিডনিতে সমস্যা দেখা দেয়।
এ পরিচিত রোগটি হলে তাই প্রথম থেকে সাবধান থাকা উচিত। জ্বর হলে সাধারণত দ্রুত হজম হয় এমন খাবার খাওয়া উচিত। প্রথম দিকে সহজপাচ্য ও পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে। জাউভাত, নরম রুটি, মাছের ঝোল, মুরগির স্যুপ, ফলের রস, ডাবের পানি, সুজি, সাগু, বার্লি, লেবুর শরবত ইত্যাদি দিতে হবে। আস্তে আস্তে রোগীর হজম ঠিকমতো হচ্ছে কি না, তার ওপর ভিত্তি করে স্বাভাবিক ভাত, মাছ, মাংস, সবজি, ডাল, ফলমূল ইত্যাদি দিতে হবে। জ্বরে শরীরের জলীয় দ্রবণ কমে যায়, তাই বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন, পটাশিয়াম, সোডিয়াম জাতীয় খনিজ লবণের চাহিদা পূরণের জন্য পানীয়ের পরিমাণ বৃদ্ধি করতে হবে। তবে চা ও কফি এক্ষেত্রে অবশ্যই বর্জন করতে হবে।
এ সময়ে অধিক পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে। টমেটোর স্যুপ, ভাতের মাড়, চিড়া ভেজানো পানি, পাকা বেল এ সময় ভালো কাজ দেয়।
তাই ঘাবড়ে না গিয়ে সঠিক পরিচর্যার মাধ্যমে ও সঠিক পথ্য গ্রহণ করে জ্বর থেকে দ্রুত সুস্থ হওয়া যায়।
লেখক : পুষ্টিবিদ
ফাতেমা সুলতানা
শমরিতা হাসপাতাল লি.
সূত্র