Topic: আল-লাজনাহ আদ-দাইমাহ লিল-বুহুছ আল ইলমিয়া ওয়াল ইফতা-এর ফতওয়া

১৯৭১ সালের ২৯শে আগস্ট (হিজরী ১৩৯১ সাল) সউদী সরকারের ১৩৭/১ নম্বর রয়াল ডিক্রি অনুযায়ী সউদী আরবে একটি কাউন্সিল গঠিত হয় তাদের উচ্চ পর্যায়ের মাওলানাদের নিয়ে। ডিক্রির চার নম্বর সেকশনে উল্লেখ করা হয়, ‘একটি চিরস্থায়ী কমিটি রাখা হলো, যে কমিটি মাওলানাদের এই কাউন্সিল থেকে সদস্য নির্বাচন করবে রয়াল ডিক্রির সাথে সামঞ্জস্য রেখে। এর উদ্দেশ্য হচ্ছে, কাউন্সিলে আলোচনা করার জন্য গবেষণা পত্র তৈরি করা এবং প্রতিটি আলাদা আলাদা বিষয়ে ফতওয়া প্রদান করা।’

এই কমিটির নামকরণ করা হয় ‘আল-লাজনাহ আদ-দাইমাহ লিল-বুহুছ আল ইলমিয়া ওয়াল ইফতা’ ইংরেজিতে "The Permanent Committee for Islamic Research and Fataawa" এবং বাংলায় ‘ইসলামী গবেষণা এবং ফতওয়ার চিরস্থায়ী কমিটি।’

এই রয়াল ডিক্রির ৮ নম্বর সেকশনে পুনরায় বলা হয়, চিরস্থায়ী কমিটির বেশিরভাগ সদস্য কোন বিষয়ে চূড়ান্ত ঐকমত্যে না পৌঁছা পর্যন্ত কোন ফতওয়া প্রদান করা হবে না। এরূপভাবে তিনজন সদস্যের কমে কোন ফতওয়ায় সিদ্ধান্ত দেয়া যাবে না। আর কোন মতের পক্ষে এবং বিপক্ষে সমান সংখ্যক রায় পাওয়া গেলে কমিটির প্রধান সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবেন।

সউদী আরবের এই ফতওয়া কমিটিকে “ক্যামেরা দিয়ে ছবি তোলা কি হারাম অথবা না?” সে প্রশ্ন করলে তারা উত্তর দেয়, “সকল মানুষ এবং অন্যান্য প্রাণী যাদের জীবন আছে তাদের ক্যামেরা বা অন্য কিছু দিয়ে ছবি তোলা হারাম। এবং যারা এরকম ছবি তুলে তাদের অনুতপ্ত হয়ে আল্লাহ পাক উনার কাছে তওবা করা উচিত। তার দ্বারা যা হয়ে গেছে তাতে যেন সে আর ফিরে না যায়।”

ডিক্রির ধারা অনুযায়ী এই ফতওয়ায় স্বাক্ষর করে কমিটির
প্রধান- শায়খ আব্দুল আজিজ ইবনে আব্দুল্লাহ বিন বা’য।
উপপ্রধান- শায়খ আব্দুর রাজ্জাক আফিফি।
সদস্য- শায়খ আব্দুল্লাহ বিন জুদাইয়ান।
সদস্য- শায়খ আব্দুল্লাহ বিন কুউদ।

এই ফতওয়ার নম্বর হচ্ছে ৩৫৯২ যা ফতওয়া কমিটির ভলিউম-১ এর ৬৭০ পৃষ্ঠায় উল্লেখ আছে। এই ফতওয়া থেকে যে বিষয়টি স্পষ্ট হলো তা হচ্ছে, সউদী সরকার কর্তৃক ওহাবী মাওলানাদের নিয়ে গঠিত সর্বোচ্চ ফতওয়া কমিটির ফতওয়া অনুযায়ী ক্যামেরার সাহায্যে যে কোন প্রাণীর ছবি তোলা হারাম।


কিন্তু বাস্তবে আমরা তার বিপরীত অবস্থা দেখতে পাচ্ছি। যিনি সমস্ত কিছুর মালিক, খালিক্ব রব্বুল আলামীন মহান আল্লাহ পাক উনার পবিত্র ঘর বাইতুল্লাহ শরীফ সংলগ্ন মসজিদুল হারামসহ সকল হজ্জ পালনের স্থানসমূহে স্থাপিত ক্যামেরার সংখ্যা ১০ হাজারেরও বেশি। এ সকল ক্যামেরা দিয়ে হজ্জের প্রতিটি এলাকার দৃশ্য ধারণ করে সম্প্রচার করা হয়। (নাউযুবিল্লাহ মিন যালিক)


তাই পৃথিবীর সাড়ে ৩০০ কোটি মুসলমানের উচিত এর তীব্র প্রতিবাদে এগিয়ে আসা এবং মক্কা শরীফ ও মদীনা শরীফসহ সকল পবিত্র স্থানসমূহ থেকে সি.সি. টিভি নামিয়ে ফেলতে সউদী সরকারকে বাধ্য করা। যাতে মুসলমানরা হারাম ছবি থেকে বেঁচে সুন্নতী কায়দায় হজ্জ করতে পারে। এভাবে ছবি তুলে কিয়ামত পর্যন্তও যদি কোন ব্যক্তি হজ্জ করে তার হজ্জ কুবল হবে না। কেননা মহান আল্লাহ পাত তিনি কালামুল্লাহ শরীফ-এ ইরশাদ করেন-

فَمَن فَرَضَ فِيهِنَّ الْحَجَّ فَلاَ رَفَثَ وَلاَ فُسُوقَ وَلاَ جِدَالَ فِي الْحَجِّ

অর্থ : “যে ব্যক্তির প্রতি হজ্জ ফরয সে যেন হজ্জ পালনের ক্ষেত্রে নির্জন অবস্থান ও তার সংশ্লিষ্ট কোন কাজ না করে এবং কোন প্রকার ফাসিকী বা নাফরমানিমূলক কাজ না করে এবং ঝগড়া-বিবাদ না করে। আর তোমরা যে নেক কাজ কর তা মহান আল্লাহ পাক তিনি জানেন। তোমরা পাথেয় সংগ্রহ কর। নিশ্চয়ই উত্তম পাথেয় হচ্ছে তাক্বওয়া।” (সূরা বাক্বারা-১৯৭)

মহান আল্লাহ পাক তিনি বান্দাদেরকে জানিয়ে দিচ্ছেন তারা যেন হজ্জ করতে গিয়ে কোন প্রকার ফাসিকী বা নাফরমানিমূলক কাজ না করে, তাহলে ছবি তুললে কি নাফরমানি করা হয় না?



Re: আল-লাজনাহ আদ-দাইমাহ লিল-বুহুছ আল ইলমিয়া ওয়াল ইফতা-এর ফতওয়া

ক্যামেরার সাহায্যে যে কোন প্রাণীর ছবি তোলা হারাম